শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।

মুহাম্মদ (সাঃ)-আল্লাহর রাসূল

মুহাম্মদ (সাঃ)-সকল মানুষের জন্য উদাহরন, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, ও আল্লাহর রাসুল

আল কোরআন - মহান আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

আমাদেরকে সরল পথ দেখাও

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

আল্লাহ নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু

সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

Labels: , ,

ইসলামে নারীর সমান উত্তরাধিকার ও “সুস্পষ্ট নির্দেশ”

নারী-অধিকার ইসলামে কেন্দ্রীয় বিষয়। সে-অধিকার কমবেশি লঙ্ঘিত হয়েছে এটা শারিয়াপন্থীরাও স্বীকার করেন। তাঁরা বলেন শারিয়া আইনগুলো ঠিকই আছে, শুধু প্রয়োগটা ঠিকমতো হচ্ছে না বলেই যত সমস্যা। আমরা বলি শারিয়া আইনের মধ্যে এত বেশি সমস্যা আছে যে এটাকে সংশোধন করা সম্ভব নয়। তাঁদের ও আমাদের মধ্যে তফাৎ শুধু এটুকুই কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। শেষ কথা হলো ইসলামের ভেতরে থেকেই নারী-অধিকার লঙ্ঘন থেকে বেরিয়ে আসার যে ইসলামি পদ্ধতি বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন তা জানা, জানানো ও সমাজে প্রতিষ্ঠা করা।

ইসলামে নারী-অধিকারের প্রধান বিষয়গুলো হলো - (১) দাসী-প্রথা, (২) অনিয়ন্ত্রিত বহুবিবাহ, (৩) স্বামীর তাৎক্ষণিক তালাকের অধিকার, (৪) নারী-নেত্রীত্ব, (৫) বিয়ে-তালাকে সাক্ষ্যে উত্তরাধিকারে পুরুষের চেয়ে কম অধিকার, (৬) তালাকের পর ভরণপোষণ, (৭) তালাকের পর বাচ্চা পাবার অধিকার, (৮) নারীর বাধ্যতামূলক হিজাব, (৯) স্বামীর স্ত্রী-প্রহারের অধিকার ইত্যাদি। এগুলো নিয়ে মুসলিম-অমুসলিমে তো বটেই, মুসলিম-মুসলিমেও তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। তাঁরা একই বিষয়ে বিভিন্ন আলেমের বিভিন্ন মতামত যুগে যুগে দেশে দেশে বিভিন্ন আইনের রূপে প্রয়োগ করেছেন বলে ইসলামের হরেকরকম চেহারা ফুটে উঠেছে। এর মধ্যে আসল ইসলাম কোন্টা তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দুনিয়ার মুসলিম-অমুসলিম সবাই বেজায় গোলকধাঁধায় পড়ে গেছে। হিজাবের কথাই ধরুন, এতেও মওলানাদের কতই না ভিন্নমত ঃ (১) দু’চোখে দু’টো জালের মতো ঘুলঘুলি রেখে আপাদমস্তক ঢাকা, (২) চেহারা খোলা রেখে আপাদমস্তক ঢাকা, (৩) শুধু মাথায় স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢাকা, (৪) হিজাব মোটেই বাধ্যতামূলক নয়, ওটা সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রথা (আল্ আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলার ডঃ তানতাওয়ি), (৫) হিজাব এসেছে ইরাণ-বিজয়ের পরে ইরাণের অভিজাত নারীদের সংস্কৃতি থেকে, ইত্যাদি। সবাই নিজের পক্ষে কোরাণ-হাদিস দেখান এবং সবাই অন্যকে ইসলাম-বিরোধী বলেন।


অনেক শারিয়া আইনে নারীরা নির্যাতিতা, অপমানিতা ও অসহায় বোধ করলেও কিছু বলেন না কারণ তাঁরা মনে করেন তাহলে ইসলামের বিরুদ্ধে যেতে হয়। কাজেই বিভিন্ন বাহানা বা যুক্তিতে নিজেদেরকে বুঝ দিয়ে তাঁরা এ-সব আইন মেনে নেবার চেষ্টা করেন। এটাই দেখা গেছে ২১ মে ২০০৮ (মুক্তিসন ৩৮) তারিখে দৈনিক ইনকিলাবে সুলতানা পারভীনের নিবন্ধে - “সৃষ্টিকর্তা নারীকে পুরুষের উপর নির্ভরশীল করে সৃষ্টি করে তাকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছেন। এ-নির্ভরশীলতাকে মেনে নিতে কষ্ট হলেও এ-থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। যেমন মানুষ মরতে না চাইলেও মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। স্রষ্টার উপর সৃষ্টির যখন কোন হাত নেই তখন স্রষ্টার ইচ্ছা ও কাজকে খুশি মনে মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তাছাড়া সৃষ্টিজগতে প্রত্যেকে প্রত্যেকের উপর নির্ভরশীল। শিশু তার পিতামাতার উপর, পিতামাতা সন্তানের উপর, রোগী তার ডাক্তার-নার্স এবং ওষুধের উপর, ক্রেতা বিক্রেতার উপর, বিক্রেতা ক্রেতার উপর, যাত্রী চালকের উপর, চালক যাত্রীর উপর, কৃষক জনগণের উপর, জনগণ কৃষকের উপর নির্ভরশীল। তাই পুরুষের স্বাধীনতা আর নারীর অধীনতাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে না দেখে কার কি দায়িত্ব সেদিকে নজর দেয়া জরুরি।”


ভেবে দেখুন “এ-নির্ভরশীলতাকে মেনে নিতে কষ্ট হলেও এ-থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই...পুরুষের স্বাধীনতা নারীর অধীনতা ... স্রষ্টার উপর সৃষ্টির কোন হাত নেই তখন স্রষ্টার ইচ্ছাকে খুশি মনে মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ”- এ-বিশ্বাস নিয়ে কিন্তু সুলতানা পারভীনরা জন্ময়নি। এ-ধরনের মিষ্টি অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীর কাছেই নারী-নির্যাতন বৈধ করা হয়েছিল হিন্দু ও ইহুদি ধর্মেও। তাঁরা জানেনও না এই বিশ্বাসে তাঁদেরকে বিশ্বাসী করে তোলার জন্য ছোটবেলা থেকেই ইসলামের এই বিশেষ ব্যাখ্যাকে দেখানো-পড়ানো হয়েছে, অন্য ব্যাখ্যাগুলোকে পড়ানো হয়নি। ফলে বন্দি নিজেই কারাগারকে পাহারা দিয়েছে, মনস্তত্ত্বে একে বলে স্টকহোম সিণ্ড্রোম। এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো অধীনতাই ইসলামে বৈধ নয় এটা উপলব্ধি করার ক্ষমতা তাঁদের কেড়ে নেয়া হয়। নাহলে তাঁরা দেখতে পেতেন পেশাগত নির্ভরশীলতা ও মানবাধিকারের নির্ভরশীলতা এক নয়। তাঁরা এ’ও দেখতে পেতেন তাঁর অসংখ্য সৃষ্টির কোন নারীকেই আল্লাহ পুরুষের ওপর নির্ভরশীল করে পয়দা করেননি, মানুষের তো নয়ই। বরং উল্টোটা আছে। কোন কোন প্রজাতির নারী অনেক বেশি ক্ষমতা ও মর্যাদাসম্পন্ন যেমন রাণী-মৌমাছি কিংবা রাণী-পিঁপড়ে। বহু প্রাচীন ও বর্তমান গোত্র নারী-প্রধান এবং তাতে তাদের কোনই সর্বনাশ হয়ে যায়নি। যেহেতু সুলতানা পারভীনের নিবন্ধটা নারীর অর্ধেক উত্তরাধিকার নিয়ে তাই উত্তরাধিকারের পটভূমিতেই আমরা ইসলামে নারীর সার্বিক অধিকার আলোচনা করব।


জাতীয় নারী-উন্নয়ন নীতিমালা ২০০৮-এর অধীনে ‘সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমান অধিকার’ প্রস্তাব বাংলাদশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনুমোদন করেছেন ২৪শে ফেব্র“য়ারী ২০০৮। এই সুযোগে হঠাৎ আবার নরনারীর সমান উত্তরাধিকারের আইন পাশ হয়ে যায় কিনা সেই দুশ্চিন্তায় মহা-উদ্বিগ্ন শারিয়াপন্থী দলগুলো প্রবল প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, কেউ কেউ এমনও বলেছেন সরকার নাকি ইসলাম থেকেই খারিজ হয়ে গেছে। শারিয়াপন্থীদের যুক্তি হল নারীর অর্ধেক উত্তরাধিকার কোরাণের সুস্পষ্ট নির্দেশ - “একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর সমান”- নিসা ১১ ও ১৭৬।


কোরাণ-হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে অসংখ্য। এবারে চলুন আমরা তার কয়েকটা দেখি। এর কোন্টা তাঁরা চাইলেও মানতে পারবেন না এবং কোন্টা মানতে পারলেও ইচ্ছে করেই মানবেন না সেটা আমি তাঁদের ওপরেই ছেড়ে দিচ্ছি। বলা বাহুল্য, নিচের কিছু হাদিস আমরা সত্যি বলে মানি না, শুধু আপনাদের অবগতির জন্য দেখাচ্ছি।


    #  উটের মূত্র পান করা - সহি বোখারী ৮ম খণ্ড হাদিস নং ৭৯৭।
    # “শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করো না” - নাহল ১২৪, আল্ আরাফ ১৬৩, নিসা ১৫৪।
    # কাফেরদের সাথে সন্ধি না করে ক্রমাগত সামরিক যুদ্ধে তাদের আঘাত করা - সুরা মুহাম্মদ ৪, ৩৫ ; আনফাল ১২ ; সুরা তওবা ২৯, ৭৩, ইত্যাদি।
    # কাফেরদের জোড়ায় জোড়ায় কাটা - আনফাল ১২।
    # গণিমতের মাল হিসেবে পরাজিত শত্র“দের সম্পত্তি ও নারী-শিশুরা বিজয়ী সৈন্যদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হবে - বহু হাদিস ও সুরা আনফাল ১, ৬৯, ইত্যাদি।
    # নিষিদ্ধ মাস পার হলে যেখানেই পাওয়া যায় মুশরিকদের খুন করা যতক্ষণ তারা মুসলমান না হচ্ছে - তওবা ৫, ২৯, ইত্যাদি।
    # সম্মানিত মাসে যুদ্ধ করা - বাকারা ২১৭।
    # দাসপ্রথা চালু করা ও বহু-দাসীর সাথে শোয়া (সর্বোচ্চ সৌদি শিক্ষাবিদ ডঃ ফওজান এ-প্রথাকে ইসলামি প্রথা বলেছেন) - মুমিনূন ৫, ৬ ; আহযাব ৫০, ইত্যাদি।
    # প্রমাণ ছাড়াই স্ত্রীর ওপরে চরিত্রহীনতার অভিযোগ এনে তাৎক্ষণিক তালাক দেয়া - নূর ৬, ৭।
    # যুদ্ধবন্দীদের ধর্ষণ করা - বোখারি ৩য় খণ্ড হাদিস ৭১৮ ও ৫ম খণ্ড হাদিস ৬৩৭ ও ৪৫৯ ; আবু দাউদ ২১৫০ ; মুসলিম ৩৪৩২।
    # কাউকে ইসলামের শত্র“ মনে হলে তাকে খুন করা ও খুন করার জন্য মিথ্যা কথা বলা - বোখারি ৫ম খণ্ড হাদিস ৩৬৯।
    # হিন্দুদের সব মন্দির ধ্বংস করে জ্বালিয়ে দেয়া - বাংলা বোখারি - আবদুল জলিল, হাদিস ২৭০।
    # চাকরি-ব্যবসা-ক্ষেতখামার সব বাদ দিয়ে “তলোয়ার দিয়ে জীবিকা নির্বাহ” করা - বোখারি ৪র্থ খণ্ড, অধ্যায় ৮৮, পৃঃ ১০৪।
    # জুম্মার নামাজে না গেলে তার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিতে চাই - বোখারি ১ম খণ্ড হাদিস ৬১৭।
    # নবীজীর সাথে উঁচু গলায় কথা বলবে না - সুরা হুজরাত ২।

তাহলে আমরা দেখছি, কোরাণ-হাদিসের বহু ‘সুনির্দিষ্ট বিধান’ আমরা ইচ্ছে করলেও মানতে পারছি না। নবীজীর সাথে সামনাসামনি কথা বলা সম্ভব নয়। ক্রীতদাস-প্রথাকে কেউ আর ফিরিয়ে আনবে না। কোরাণে সুরা তওবা বা সুরা মুহম্মদ-এ অমুসলিম-হত্যার কথা স্পষ্ট লেখা থাকার পরও মওলানারা ঠিকই বলেন ওগুলোর সুনির্দিষ্ট পটভূমি আছে যা এখন প্রযোজ্য নয়। যেমনঃ-“মুসলমানরা চিরকাল অমুসলমানকে ধরে মারবে-কাটবে” এ-কথা বলা পাগলামি ছাড়া কিছুই নয় - (বিশ্ববিখ্যাত শারিয়া-সমর্থক পণ্ডিত ডঃ জামাল বাদাওয়ি - টরণ্টো শহরে বক্তৃতা)। কোরাণের “শনিবারের সীমা লঙ্ঘন করা” বা সম্মানিত মাস ও নিষিদ্ধ মাসও শুধুমাত্র যুদ্ধের ব্যাপারে আরবদের প্রাচীন সংস্কৃতি, এখন ওগুলো আর ইচ্ছে করলেও পালন করা সম্ভব নয়।


সুস্পষ্ট নির্দেশেরও স্থান-কাল-পাত্রের সীমাবদ্ধতা থাকে তাই নির্দেশ সুস্পষ্ট হলেও সেটা চিরকালের না’ও হতে পারে। ইমাম শাফি’ই তাঁর বিখ্যাত কেতাব রিসালা-তেও চমৎকারভাবে দেখিয়েছেন কোরাণের বহু আয়াত বিভিন্ন মানুষের জন্য - পৃঃ ৩৫, ৯৭, ২০০, ইত্যাদি। বাংলাদেশ জামাত-এর তত্ত্বগুরু শাহ আবদুল হান্নানও লিখেছেন ঃ “জিজিয়ার বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট। ইহা কেবল বিশেষ পরিস্থিতিতেই প্রযোজ্য। যদি সেই পরিস্থিতি না থাকে তবে ইহা প্রয়োগের প্রয়োজন নাই। ইহা দাসপ্রথার মতোই। যেহেতু দাসপ্রথা নাই, তাই কোরাণ-সুন্নাহ-এ ইহার আইনগুলিও এখন প্রযোজ্য নহে” (খবর ইয়াহুগ্র“প, ১লা মে, ২০০৮)। সামাজিক বিধানের নির্দিষ্ট পটভূমি অস্বীকার করে সেটাকে চিরকালের জন্য প্রয়োগ করলে আমরা কঠিন চোরাবালিতে ডুবে যাব। যদি কোন ইসলাম-বিদ্বেষী আপনাকে বলে বাকারা ২২৩ অত্যন্ত কুৎসিৎ আয়াত, তবে তার সামনে আপনি তুলে ধরবেন সহি আবু দাউদ হাদিস ২১৫৯। ওখানে আয়াতটার পটভূমিতে দেখানো আছে ওটা কুৎসিৎ তো নয়ই বরং প্রয়োজনীয়।


কোরাণে সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে অমুসলিমদের কাছ থেকে জিজিয়া কর নেবার, চোরের হাত কেটে দেবার, আর আছে ইহুদি-খ্রীষ্টান নারীকে বিয়ে করার অনুমতি (সুরা মায়েদা, আয়াত ৫ ও ৩৮)। কিন্তু হজরত ওমর (রাঃ) বিভিন্ন কারণে কিছু বিশেষ ব্যক্তি এবং আল্ জুরাজিমাহ গোত্র ও ইরাণের এক গোত্রের কাছ থেকে জিজিয়া কর নেননি। আরো দেখুন মুহিউদ্দিন খানের অনুদিত বাংলা-কোরাণ পৃষ্ঠা ৫৬৭। অন্যান্য সূত্রে আমরা দেখি এমনকি এক মুসলিম গোত্রের কাছ থেকেও তিনি জিজিয়া কর নিয়েছেন। সুরা তওবা আয়াত ৬০-এর ভিত্তিতে মুয়াল্লাফা গোত্র নবীজী (দঃ)-এর সময় থেকে যে জাকাত পেত সেটা, দুর্ভিক্ষের সময়ে চোরের হাত কাটা এবং বিশেষ ক্ষেত্রে ইহুদি-খ্রীষ্টান নারীকে বিয়ে করা তিনি বন্ধ করেছেন (প্রিন্সিপল্স্ অব্ ইসলামিক জুরি¯প্র“ডেন্স - ডঃ হাশিম কামালী, পৃঃ ৩২৫)। অথচ এর প্রতিটিই কোরাণের সুস্পষ্ট নির্দেশ। শুধু কোরাণেই নয়, হাদিসেরও উদ্ধৃতি দিচ্ছি ঃ - “আলী ইবনে আবু তালিব বলিয়াছেন ঃ মদ্যপানের জন্য আল্লাহ’র রসুল (সাঃ) এবং আবু বকর চল্লিশ বেত্রাঘাত দিয়াছেন এবং ওমরা তাহা আশি করেন” - সহি আবু দাউদ হাদিস নং ৪৪৬৬

খেয়াল করুন - “হজরত ওমর (রাঃ) বাকী সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করে হাদিস ২০৩ বলবৎ করেন ও হাদিস ২০৪, ২০৫ ও ২০৬-কে রহিত করেন।” নবীজীর সময়ের তামাত্তু হজ্বের পদ্ধতিও তিনি বদল করেছেন। একটু খুঁটিয়ে দেখলে দেখা যাবে আপাতদৃষ্টিতে কোরাণের অক্ষর লঙ্ঘন করলেও তিনি অনুসরণ করেছেন কোরাণের মূল্যবোধ যা কোরাণ নিজেই এবং স্বয়ং নবীজী তাঁর সুন্নতে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এই সুন্নত মেনে খলীফা মামুনও এক গীর্জা থেকে জিজিয়া কর নেননি (সূত্র সহি বুখারি ২য় খণ্ড হাদিস ৬৩৪ ও ৬৪২, প্রিন্সিপল্স্ অব্ ইসলামি জুরি¯প্র“ডেন্স - ডঃ হাশিম কামালি, আজিজুল হক সাহেবের অনুদিত সহি বুখারীতেও থাকার কথা - ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ১৯৭, ইত্যাদি)।
আরো দেখুন ঃ “সামরিক চাকরি হইতে রেহাই দিবার জন্য সক্ষম মুসলিম পুরুষদের উপর জিজিয়া ধার্য করা হইয়াছিল...খ্রীষ্টান গোত্র আল্ জুরাজিমাহ-কে এই চুক্তিতে জিজিয়া হইতে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছিল যে তাহারা মুসলিমদিগের সহিত যোগ দিয়া (শত্র“র বিরুদ্ধে - লেখক) যুদ্ধ করিবে ও গণিমতের মালের অংশীদার হইবে” - “ইসলামে দ্য মিস্আণ্ডারস্টুড রিলিজিয়ান” - বিশ্ববিখ্যাত শারিয়া-নেতা সৈয়দ কুতুব

যঃঃঢ়://িি.িরংষধসনধংরপং.পড়স/ারব.িঢ়যঢ়?নশওউ=১৫৭্পযধঢ়ঃবৎ=১৫#থভঃহ১.
আমরা জানি নবীজী পরের নেতা ঠিক করে যাননি, জনগণের ইচ্ছের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন। অথচ হজরত আবু বকর রসুলের অনুকরণ না করে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন হজরত ওমরকে। এবং হজরত ওমরও রসুলের অনুকরণ না করে ছয় জনের এক কমিটি বানিয়ে তার ওপর ভার দিয়ে গিয়েছিলেন ঐ কমিটির ভেতর থেকেই পরের খলিফা ঠিক করতে। এ থেকে কি প্রমাণ হয় ? প্রমাণ হয় যা তাঁরা ঠিকই জানতেন, নবীজীর হাজার হাজার সুন্নতের সবগুলোই ইসলামি ধর্মবিশ্বাসের অংশ নয়। আমাদের আলেমদেরও তা জানতে হবে ও জাতিকে জানাতে হবে। সামাজিক পটভূমির ওপরে নবীজীর সুন্নত পরিবর্তনের কঠিন সুন্নত আছে।


কি সেই সুন্নত, কোরাণের কি সেই পদ্ধতি যা সর্বকালের মওলানাদের জন্য অবশ্য পালনীয় ?
খেয়াল করুন। নবীজী (দঃ) অনেক কিছু বদলেছেন যেমন ঃ (১) বহু বছর চালু রাখার পরে মু’তা বিবাহ (সাময়িক অস্থায়ী বিয়ে) নিষিদ্ধ করেছেন ; (২) প্রথমদিকের দু’ওয়াক্ত নামাজ মেরাজের পর পাঁচ ওয়াক্ত করেছেন ; (৩) সিদ্ধান্ত বদলেছেন কবর-জিয়ারত বা কোরবাণির মাংস সংরক্ষণের ব্যাপারে, এবং (৪) অন্যান্য বহু বিষয়ে। এ-থেকে আমরা কি পাচ্ছি ? চিন্তা করে দেখুন। স্বয়ং নবীজীর সামনেই কোরাণে-সুন্নতে পরিবর্তন করা হয়েছে। কেন করা হয়েছে ? ডঃ কামালি বলছেন ঃ “নবী (দঃ)-এর সময়েই কোরাণ ও সুন্নাহ-তে কিছু সম্পূর্ণ ও কিছু আংশিক পরিবর্তন করা হয়। পরিস্থিতির পরিবর্তনই ইহার মূল কারণ।”


স্বয়ং কোরাণ বলছে ঃ “আমি কোন আয়াত রহিত করিলে বা ভুলাইয়া দিলে তাহা অপেক্ষা উত্তম বা সমপর্যায়ের আয়াত আনি” (বাকারা ১০৬) এবং “যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত আনি এবং আল্লাহ যা নাজিল করেন তা তিনিই ভালো জানেন” (নাহ্ল আয়াত ১০১)। একে বলে নস্খ্। কোরাণও বিভিন্ন বিধান বহু বছর চালু রাখার পরে বদলেছে, যেমন ঃ (১) আল্লাহ’র কাছে সুপারিশ করার পদ্ধতি বদল করেছে আন্ নাবা ৩৮ ; বাকারা ৪৮, ১২৩, ২৫৪ ; নিসা ১২৩ ; আনাম ৫১, ৭০ ; আল্ যুমার ১৯, ইত্যাদিতে। (২) জেরুজালেমের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ ১৪ বছর চালু রাখার পরে বদলিয়ে কাবা’র দিকে করেছে (বাকারা ১৪২ - ১৪৪ ; সহি বুখারী হাদিস নং ৪১৯ ও ৪২০, হাফেজ আবদুল জলিল)। (৩) বিধবার এক বছরের ইদ্দত বহু বছর চালু রাখার পরে বাতিল করে চার মাস দশ দিন করেছে (বাকারা ২৪০ ও ২৩৪)। (৪) একসাথে দু’বোনকে বিয়ের প্রথা বহু বছর চালু রাখার পরে নিষিদ্ধ করেছে (নিসা ২৩)। (৫) অনিয়ন্ত্রিত বহুবিবাহকে বহু বছর চালু রাখার পরে সর্বোচ্চ চার স্ত্রী করেছে (নিসা ৪)। (৬) পিতামাতা ও আত্মীয়দের উত্তরাধিকার বহু বছর চালু রাখার পর পরিবর্তন করেছে (বাকারা ১৮০, নিসা ১১)। (৭) বহু বছর চালু রাখার পরে যিহার বাতিল করেছে (সুরা সেজদাহ ৪)। (৮) আরও উদাহরণ দেখুন মওলানা মুহিউদ্দীনের অনুদিত কোরাণ পৃষ্ঠা ৫৩, ১২৫৫ ও ১৩৪৭। (৯) বুখারীতে আছে ঃ “ইবনে উমর এই আয়াত পড়িত - ‘তাহাদের সুযোগ ছিল রোজা রাখা অথবা কোন দরিদ্রকে প্রতিদিন খাওয়ানো’ এবং বলিয়াছে এই আয়াতের আদেশ রহিত করা হয় (৩য় খণ্ড হাদিস ১৭০) এবং “র্বা মাউনাতে যাহারা নিহত হইয়াছিল তাহাদের উপর নাজেলকৃত আয়াতটি আমরা পড়িতাম কিন্তু পরে তাহা বাতিল করা হয়” (৪র্থ খণ্ড হাদিস ৬৯)। নবীজীর সাথে একান্তে কথা বলতে হলে কিছু সদকা দিতে হবে এ-আয়াতও আল্লাহ নাজিল করে পরে নিজেই রহিত করেন (মুহিউদ্দিন খানের অনুদিত বাংলা-কোরাণ পৃষ্ঠা ১৩৪৭)। আল্লাহ নিজেরই সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতিল ও রহিত করেছিলেন তার নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে এটা “সুস্পষ্ট নির্দেশ’-এর প্রবক্তারা কি করে অস্বীকার করবেন ?


একদিকে আমরা স্পষ্ট দেখছি আল্লাহ ও নবীজী একের পর এক নূতন সামাজিক বিধান চালু করছেন, অনেক পরে তার কোনোটা বদলাচ্ছেন কিংবা বাতিল করছেন। আবার অন্যদিকে দেখছি আল্লাহ বলছেন ঃ “আপনি কখনো পরিবর্তন পাবেন না আল্লাহ’র সুন্নাহ-এ” (সুন্ন্াহ - অর্থাৎ রীতিনীতি, প্রতিষ্ঠিত নিয়ম, চালু বিধান ইত্যাদি - সুরা আহযাব ৬২)। একটু খুঁটিয়ে দেখলেই দেখা যাবে যেটাতে “কখনো পরিবর্তন পাবেন না” তা হল মূল্যবোধ ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, আর যেটাতে পরিবর্তন পাবেন তা হল সামাজিক বিধানের প্রণয়ন, পরিবর্তন ও বাতিল। মনে আছে ছোটবেলায় মা আপনাকে বলেছিলেন “যাও গোসল কর ?” আবার একদিন এ’ও বলেছিলেন “গোসল করো না।” দু’টোই দলিলে ধরা আছে বলে আমি কি বলতে পারি আপনার মা হয় নির্বোধ কিংবা থুক্কু করে আগের ভুলটা শুধরেছেন ? মোটেই তা নয়। “যাও গোসল কর” তিনি বলেছিলেন যেদিন আপনি খেলা শেষে ধুলোমাখা দেহে ঘরে ফিরেছিলেন, এবং “গোসল করো না” বলেছিলেন যেদিন আপনার জ্বর হয়েছিল। আপনার কল্যাণ হল তাঁর মূল্যবোধ, ওটা ঠিক রাখার জন্যই নির্দেশ বদল। চিন্তা করুন, যদি তিনি ‘সুস্পষ্ট নির্দেশ” না বদলিয়ে জ্বরের দিনেও বলতেন “যাও গোসল কর” তবে আপনার কি অবস্থা দাঁড়াতো ?


ইসলামেও তাই। কোরাণে দেয়া মানবকল্যাণের মূল্যবোধ বজায় রেখে সামাজিক বিধান বদলানো ইসলামের অপরিহার্য শর্ত। এজন্যই কোরাণ-রসুলের নস্খ্। ডঃ কামালি বলছেন ঃ “মানুষের উপকারের জন্য সমাজের বিদ্যমান পটভূমি ও আইনের সমন্বয় করার প্রয়োজনে নস্খ্ আসিয়াছে...কোরাণ ও হাদিসে নস্খ্-এর সর্বপ্রধান কারণ হইল স্থান-কালের বিষয়টি।” এই সমন্বয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ইসলামের এক সমালোচনার জবাবে বলেছেন মওলানা মওদুদি’ও ঃ “তৎকালীন (অতীতের) বিদ্যমান পরিস্থিতি উপেক্ষা করিয়া ওই সময়ের ঘটনাকে বর্তমানের আলোকে দেখিবার জন্যই এই ভুল হইয়াছে”- ইসলামিক ল’ অ্যাণ্ড কন্সটিটিউশন পৃষ্ঠা ২৩৬। ইউরোপের বিখ্যাত শারিয়া-সমর্থক বিলাল ফিলিপ বলেছেন ঃ “আল্লাহ কখনো কোনো তাৎক্ষণিক কারণে মানুষের উপযোগী আইন দেন। কিন্তু পরে ইহার উদ্দেশ্যে হাসিল হইয়া ইহার উপকারিতা লোপ পায়। এই পরিস্থিতিতে আর ইহার অস্তিত্ব থাকে না”- দি এভোল্যুশন অব্ ফিক্হ্ পৃষ্ঠা ২০। মওলানা মুহিউদ্দিনের কোরাণেও এই একই কথা আছে ৩৩৪ পৃষ্ঠায় ঃ “নাসিখ ও মনসুখের অবস্থা একজন বিজ্ঞ হাকিম ও ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্রের মত...ডাক্তার যখন পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপত্র রহিত করে নূতন ব্যবস্থাপত্র দেন তখন এরূপ বলা ঠিক নয় যে পূর্বের ব্যবস্থাপত্রটি ভুল ছিল ... বরং আসল সত্য হচ্ছে এই যে, বিগত দিনগুলোতে সে ব্যবস্থাপত্রই নির্ভুল ও জরুরি ছিল এবং পরবর্তী পরিবর্তিত এ-ব্যবস্থাপত্রই নির্ভুল ও জরুরী।” তিনি ৫৩ পৃষ্ঠাতেও ওই একই কথা বলেছেন। এমনকি মওদুদী যে মওদুদী. সেই তিনিও স্বীকার করেছেন ঃ “কোরাণ-সুন্নাহ’র সুস্পষ্ট নির্দেশ বদলাইবার অধিকার কাহারো নাই। অন্যদিকে আমি ইহাও বলিয়াছি, ভিন্ন পরিস্থিতিতে ইজতিহাদ প্রয়োগ করিয়া সময়ের দাবীর ভিত্তিতে ঐগুলি পরিবর্তনকে বৈধ করা যাইতে পারে” (ইসলামিক ল’ অ্যাণ্ড কন্সিটিটিউশন, পৃঃ ৯৩)।


কি আশ্চর্য - আমরাও তো হুবহু এই একই কথা বলছি ! চোদ্দশ’ বছরে সামাজিক-পারিবারিক পরিবর্তনের বাস্তবতাকে স্বীকার করাটাই তো ইসলাম। বিভিন্ন দেশে শারিয়াপন্থীরা এটা তো স্বাীকার করে নিচ্ছেনও, বিধান তো বদলাচ্ছেনও যেমন বাতিল করছেন তাৎক্ষণিক তালাক, মুরতাদ-হত্যা, জিজিয়া কর এবং অনুমোদন করছেন নারী নেত্রীত্ব, নারীর বিচারক হওয়া, ইত্যাদি। এটা ভালো লক্ষণ। এভাবেই তাঁরা একদিন পারিবারিক আইনগুলোও বদলাবেন তাতে কোনই সন্দেহ নেই।


এবারে আমি আবারো মওলানা মওদুদি’র প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করব, বিশেষ করে শারিয়াপন্থীদের। তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন “বিভিন্ন পয়গম্বরের প্রচারিত ধর্র্মীয় আইনগুলিতে ভিন্নতা আছে কেন ? (ফরভভবৎ রহ সধঃঃবৎং ড়ভ ফবঃধরষ)...বিভিন্ন পয়গম্বরের প্রচারিত বেহেশতি কেতাবে নির্দেশিত ইবাদতের পদ্ধতিতে, হালাল-হারামের বিধানগুলিতে ও সামাজিক আইনগুলির বিস্তারিত কাঠামোতে (ফবঃধরষবফ ষবমধষ ৎবমঁষধঃরড়হং) ভিন্নতা আছে কেন ?...(কারণ) স্বয়ং আল্লাহ বিভিন্ন সময়ের, বিভিন্ন জাতির ও বিভিন্ন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াইবার জন্য আইনের ধারা (ষবমধষ ঢ়ৎবংপৎরঢ়ঃরড়হং) বদলাইয়াছেন”- তাঁর তাফহিমুল কুরাণে মায়েদা ৪৮-এর ব্যাখ্যা - যঃঃঢ়;//িি.িঃধভযববস.হবঃ/সধরহ.যঃসষ।


কি আশ্চর্য - আমরাও তো হুবহু এই একই কথা বলছি ! কোরাণের এই বাস্তব বিধানটা মেনে নিলেই তো হল ! এই মূল্যবোধ মেনেই তো রসুল, খলিফা এবং মওলানারা অনেক বিধান বদলেছেন। যেমন হজ্বের সময় পাথর মারার পদ্ধতি, মহাশূন্যে এবং উত্তর গোলার্ধে নামাজ-রোজার সময়, বেশকিছু মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে সমান উত্তরাধিকার ইত্যাদি, যেমন মরক্কো, সিনেগাল ও তিউনিসিয়া (তিউনিসিয়ায় মুসলমান শতকরা ৯৯%)। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কিরগিজস্তানে দ্বিতীয় বিয়ে করলে সটান দু’বছরের কারাদণ্ড - কোনো খাতির নেই। এমনকি গত ফেব্র“য়ারীতে ইরাণের গ্র্যাণ্ড আয়াতুল্লাহ সানে’ই বিধবার উত্তরাধিকার পরিবর্তনের ফতোয়া দিয়েছেন। এঁদের কাউকেই তো কেউ মুরতাদ বলেনি ! উনারা যদি পারেন, আমাদের মওলানারাও পারেন। উনারা যেভাবে পারেন, আমাদের মওলানারও সেভাবে পারেন। দরকার শুধু উপলব্ধির ও নিয়তের। কিন্তু ইসলামের এই গতিময়তা না বুঝার ফলে আমাদের আলেম সমাজের ভাবমূর্তি নারী-বিরোধী হয়ে পড়েছে যা সমাজের জন্য মোটেই ভালো নয়।


এ বিষয়ে দৈনিকগুলোত অসংখ্য নিবন্ধে কোরাণে নারীর উত্তরাধিকারের সব আয়াতের সমষ্টি দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে যে উত্তরাধিকার অর্ধেক হলেও নারীর উপার্জন, দেনমোহর-ভরণপোষণ সব মিলিয়ে নারী পুরুষের বেশিই পায় তত্ব হিসেবে। বাস্তবে কথাটা সত্যি নয়। দৈনিক ইনকিলাব ২৫ মে ২০০৮ তারিখে জনাব মোহাম্মদ আবদুল অদুদ ‘ইনসাফ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা’ নিবন্ধে চমৎকার বাক্যে লিখেছেন - “আল্লাহ প্রদত্ত মুসলিম পারিবারিক আইন একটি অঙ্কের শিকল। এর কোথাও বিচ্যুতি ঘটলে, পুরোটাতেই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে।” আমরা নিরীক্ষা করে দেখেছি আসলেই তাই, অঙ্কটা মেলে চমৎকার। কিন্তু শারিয়াপন্থীরা যা খেয়াল করেন না তা হলো অঙ্কটা মেলে চোদ্দশ’ বছর আগের সমাজের আর্থ-পারিবারিক-সামাজিক কাঠামোর সাথেই। চোদ্দশ’ বছরের বিবর্তনে শিকলটার কিছু অংশ খসে পড়ে পৃথিবী থেকে উধাও হয়ে নূতন অংশ ঢুকেছে বলে বর্তমানে ওই শিকল প্রয়োগ করা অসম্ভব। তা করতে গেলে বিশ্বকে সেই চোদ্দশ’ বছর আগের আর্থ-পারিবারিক-সামাজিক অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে যা অবাস্তব ও অসম্ভব। তাই বুঝি ‘বাস্তববাদী’ বলে বিখ্যাত ইমাম তাইমিয়া বলেছেন “মুসলিম বিশ্বে কোন চিরন্তন শাসনব্যবস্থা বাস্তবভিত্তিকও নহে, সম্ভবও নহে”- পলিটিক্যাল থট্ অব্ ইবনে তাইমিয়া, পৃঃ ১০৬। সেই সমাজে গোত্র তার প্রতিটি সদস্য ও নারীকে প্রাণপণে সবদিক দিয়ে রক্ষা করত। এতে গোত্রের সম্মান ও শক্তি বজায় থাকত। কিন্তু নারীর সে রক্ষাকবচটা আজ নেই, জনসংখ্যা ও সম্পদের সেই ভারসাম্যও নেই। এখন ছোট্ট একক পরিবারে বাবা-মা, ভাইবোন বা রাষ্ট্র কেউই কাউকে সবদিক দিয়ে রক্ষা করতে পারে না। তাই বহু পরিত্যক্ত নারীর শেষ উপায় দাঁড়ায় ভিক্ষাবৃত্তি বা পতিতাবৃত্তি। পতিতালয়ের অনেক রিপোর্টে এর বাস্তব প্রমাণ আছে।


আমাদের বুঝতে হবে কোরাণ হঠাৎ একদিন এ-সব সামাজিক বিধান দিয়ে শূন্য থেকে নূতন সমাজ সৃষ্টি করেনি। কোরাণ সেই প্রাচীন সমাজের নারী-বিরোধীতায় কিছুটা ভারসাম্য এসে ভবিষ্যতের সমান অধিকারের পথ দেখিয়ে গেছে। এ দু’য়ে যে আকাশ-পাতাল তফাৎ সেটা না বুঝলে আমরা কোনদিনই ইসলামে মানবকল্যাণের মর্মবাণী বুঝব না। সেই সমাজে নারীকে পুরুষের চেয়ে কম অধিকার দেয়ার কারণ হল নারীর দায়িত্ব নেবার অক্ষমতা। কিন্তু তার জন্য নারী দায়ী নয়, দায়ী সেই সমাজব্যবস্থা। তাছাড়া এখন যে বাংলাদেশে প্রায়ই নীরব দুর্ভিক্ষ, মারাত্মক কর্মহীনতা, ভয়াবহ সিডর আর মঙ্গায় মরে যায় কোটি মানুষ আর রাস্তায় পড়ে থাকে হাড্ডিসার লাশ, লেগে থাকে বন্যা-খরা-ঝড়ের ধ্বংস, কোটি মানুষ অর্ধাহারে সে দেশে দেনমোহর বা স্বামীর ভরণপোষণের দায়িত্বের যুক্তি নিষ্ঠুর পরিহাস মাত্র। যাঁরা বলেন দেনমোহর হল নারীর রক্ষাবকচ তাঁদের জানা উচিত নারীর সারাজীবনের খরচ হবার মত দেনমোহর কখনোই ধার্য করা হয় না। তাছাড়া দেনমোহর হতে পারে একজোড়া জুতো বা কোরাণ থেকে কিছু তেলাওয়াত (শারিয়া দি ইসলামিক ল’ পৃষ্ঠা ১৬৩, ১৬৪ ও বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা ৯৭৬ সহি বুখারী ৭ম খণ্ড ২৪ ও সহি তিরমিডি ৯৫১)। স্বামীর ভরণেপোষণের দায়িত্বের যুক্তি যাঁরা দেখান তাঁদের জানা উচিত সেই দায়িত্ব হল ঃ “স্বামী খাবার, বাসা ও পোশাক দিবে বাধ্য স্ত্রীকে, অবাধ্য স্ত্রীকে নহে। বাচ্চা হইবার সময় ব্যতীত অন্য সময়ে ডাক্তার-ওষুধের খরচ বা সাবান-প্রসাধন দিতে স্বামী বাধ্য নহে” (হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১৪০ ও শাফি’ আইন এম-১১-৪)। বলাই বাহুল্য, কে বাধ্য আর কে অবাধ্য স্ত্রী তা কিন্তু ঠিক করবে ঐ স্বামীই। হানাফি-শাফি’ কেতাব হাতের কাছে না থাকলে দেখে নিন মুহিউদ্দিন খান অনুদিত বাংলা কোরাণ পৃষ্ঠা ৮৫৭ ঃ “স্ত্রীর যে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর যিম্মায় ওয়াজিব তা চারটি বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ - আহার, পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান। স্বামী এর বেশি কিছু স্ত্রীকে দিলে অথবা ব্যয় করলে তা হবে অনুগ্রহ, অপরিহার্য নয়।” এসব অত্যন্ত নির্লজ্জ আইন। স্বামী তালাক দিলে স্ত্রী খোরপোষ পাবে মাত্র তিন মাস। আর তাৎক্ষণিক তালাকে তো খোরপোষের কোনো বালাই-ই নেই। তারপর সে স্ত্রী কি খাবে কি পরবে তার কোনো হদিস নেই। কাজেই নারীকে আর্থিক দিক দিয়ে শক্তিশালী করার দরকার আছে।


শারিয়াপন্থীরা সর্বদাই বলেন আয়াতের পটভূমি থেকে নির্দেশ নিতে। কথাটা ঠিক, কারণ কোরাণের কি কি নির্দেশ তখনকার জন্য আর কি কি নির্দেশ শাশ্বত তা পটভূমি থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু তাঁরা নারী-অত্যাচারের জন্য ঐ পটভূমিই লঙ্ঘন করেন। উত্তরাধিকারের বেলায়ও কথাটা সত্যি। সুরা নিসা আয়াত ১১ ও ১৭৬-তে নারীর অর্ধেক উত্তরাধিকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশ আছে। আয়াত ১৭৬-এর পটভূমি পাওয়া যায়নি, কেউ জানালে বাধিথ হব। আয়াত ১১ নাজিল হয়েছিল এক বিশেষ পটভূমিতে। আউস বিন্ সাবেত নামে এক ধনী আনসারের মৃত্যু হলে তখনকার আর্থ-সামাজিক ঐতিহ্য অনুযায়ী আউসের চাচাতো ভাই এসে তার স্ত্রী, দুই বালেগ মেয়ে ও এক নাবালেগ ছেলেকে বঞ্চিত ক’রে সব সম্পত্তি গ্রাস ক’রে ফেলে (কোরাণের বাংলা অনুবাদ - মুহিউদ্দিন খান, পৃষ্ঠা ২৩৪, এবং ডঃ মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ, - দ্য মুসলিম উইমেন)। কোরাণ আে নাবালেগ পুত্রের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বালেগ বোনের দ্বিগুণ সম্পত্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ এই আয়াত শাশ্বত নয় বরং তাৎক্ষণিক বিশেষ পরিস্থিতির সমাধান। আজ যদি কোরাণ মেনে ঐ আয়াত প্রয়োগ করতে হয় তবে শুধুমাত্র নাবালেগ পুত্র এবং বালেগ বোনদের ক্ষেত্রেই সেটা প্রয়োগ করা যেতে পারে। সেই বিশেষ পরিস্থিতি না হলে ঐ সুরা নিসা আয়াত ১২ মোতাবেকই নর-নারীর সমান উত্তরাধিকার হতেই হবে। সেখানে মৃতের ভাই-বোনের সমান উত্তরাধিকারের যে নির্দেশ দেয়া আছে সেটা কোথায় গেল ? মৃতের ভাই-বোন সমান পেলে তার ছেলেমেয়েরা অবশ্যই সমান পাবে।


আসল কথা হলো, নিয়ত ও বাস্তবের উপলব্ধি। আমাদের ইসলামী নেতৃত্ব যদি কোরাণ-রসুলের দেয়া পদ্ধতি অনুসারে মূল্যবোধ বজায় রেখে বাস্তব বদলের সাথে নারী-অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান তবে তার সমর্থন কোরাণ-রসুল থেকেই পাবেন।  বাংলাদেশ জামাতে ইসলামি বলেন তাঁরা তাঁদের হারাম নারী-নেত্রীত্ব হালাল করেছেন পরিস্থিতির কারণে। তাঁদের বুঝা উচিত নারীর সমান-উত্তরাধিকারও হওয়া প্রয়োজন ওই পরিস্থিতির কারণেই। আমার সাথে ভয়েস্ অব্ আমেরিকা রেডিও-বিতর্কে এক উঁচুস্তরের শারিয়া-নেতা আমাকে বলেছেন নারী ত্রিশ কেজি ওজন তুলতে পারে না কিন্তু পুরুষ পারে। রেডিওতে দুনিয়ার সামনে আমি তাঁকে অসম্মান করতে চাইনি কিন্তু এ-যুক্তি সত্যি হলে মানুষ নয় বরং হাতি বা গণ্ডার হওয়া উচিত আশরাফুল মাখলুকাত। “কলসি কাঁখে ঘাটে যায় কোন্ রূপসী” গানটা শুনতে ভালো কিন্তু দু’কলসি পানি মাথায় নিয়ে আধ-মাইল হাঁটলে তালপাতার সেপাই অনেক পুরুষেরই ঘাড়ের হাড় নড়ে যাবে। অথচ বহু জায়গায়, বিশেষত ভারতের মধ্যপ্রদেশে নারীরা মাথায় ক’রে দু’কলসী পানি বয় মাইল ধরে, প্রতিদিন। ক’জন পুরুষ পারবে তা ? একটানা তিন ঘণ্টা কুলো ঝাড়লে কিংবা ঢেঁকি পাড় দিলে বহু পুরুষই বুঝবে নারীর শক্তি ও ধৈর্য কত অসাধারণ, তা’ও আবার হাসিমুখে। সেজন্যই বলি, নারীকে কোনই সাহায্য করতে হবে না - শুধু ওদের বাধা না দিলেই ওরা অসাধ্য সাধন করে দেখাবে। নারীকে অক্ষম ও দুর্বল ইসলাম করেনি, করেছি আমরা।


অসীম কোরাণ দু’হাত ভরে দিতে চায় কিন্তু সসীম মানুষ দু’হাতের ওপরে দু’মুঠোর বেশি নিতে পারে না। আমাদের বুঝতে হবে মদ্যপানের মতো অভিশাপ কোরাণ হুকুম দিয়ে একদিনে দূর করতে পারত কিন্তু কেন ধীরে ধীরে তিনটে পদক্ষেপ নিল। দাসপ্রথার মতো অভিশাপ কোরাণ এক হুকুমে দূর করতে পারত কিন্তু কেন একটু একটু করে এগিয়ে বহু বছর পর উচ্ছেদ করল (সুরা মুহম্মদ ৪)। পুরুষের ইচ্ছেমতো বহুবিবাহ আর তালাক, স্ত্রী-প্রহার, প্রতিটি নারী সম্পত্তিহীন, তার চাক্ষুষ সাক্ষ্য আদালতে অচল ইত্যাদি শুধু আরবেই নয় বরং মানুষের সামগ্রিক ইতিহাসের চিরন্তন কুপ্রথা। সেগুলোকেও কোরাণ এক হুকুমে দূর করতে পারত। কিন্তু কোরাণ জানে, কোনো ভাল বিধানও মানুষ যদি না উপলব্ধি করে তবে জোর করে চাপিয়ে দিলে আখেরে সমাজের সর্বনাশ হতে বাধ্য। তাই আমরা দেখি কোরাণ অতি সতর্কভাবে একটু একটু করে ততটুকুই প্রতিষ্ঠিত করেছে যতটুকু মানুষ নিতে পারত, যতটুকু সেই সমাজে সম্ভব ছিল। সে-জন্যই কোরাণ প্রাথমিকভাবে প্রতিটি নারী-অত্যাচারের ওপরে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি করেছে, অর্ধেক হলেও নারী-সাক্ষ্য ও নারী-উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু সেটাই মঞ্জিলে-মকসুদ নয়। এ-সমস্যারও শেকড় এত গভীরে ছিল যে দাসপ্রথার মতো এটাও পুরো করা নবীজীর সময়ে সম্ভব হয়নি। তাই কোরাণ দিয়ে রেখেছে গন্তব্যের নির্দেশ - দাসপ্রথা উচ্ছেদ কর এবং নরনারী পরস্পরের পোশাক, পরস্পরের ওলী। পোশাক বা ওলী পরস্পরের অর্ধেক হয় না।

আর, কোরাণ লঙ্ঘন ? তার বহু উদাহরণ তো আমাদের চোখের সামনেই আছে। দেখুন বি-বি-সি’র খবর ঃ “১৯৯৭ সালে গৃহীত ‘নারী উন্নয়ন নীতি-৯৭’-এ নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার বিষয়ে ৭.১ ধারায় বর্ণিত ‘সমান অধিকার’ শব্দ দু’টি বাদ দিয়ে করা হয়েছে ‘সংবিধান-সম্মত অধিকার’। ৭.২ ধারার ‘সম্পদ, বাসস্থান, অংশীদারিত্ব, উত্তরাধিকার-সম্পদ, ভূমির ওপর অধিকার আইন’ ইত্যাদি লাইন ও শব্দ বাদ দেয়া হয়েছে। ৭.৩ ধারায় ‘নারীর সর্বাত্মক কর্মসংস্থান’ বদলে করা হয়েছে ‘যথোপযুক্ত’। ধারা ৮ থেকে রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের পুরোটাই এবং মন্ত্রীপরিষদ, সংসদ ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত কয়েকটি অংশ সম্পূর্ণভাবেই বাদ দেয়া হয়েছে।” বলাই বাহুল্য ওই ‘যথোপযুক্ত’ ও ‘সংবিধান-সম্মত’ অধিকারগুলো কি তা কিন্তু তাঁরাই ঠিক করবেন। এগুলো চালাকি ছাড়া আর কিছু নয় এবং চালাকি দিয়ে সমাজের মঙ্গল করা যায় না। দেখুন ইসলামি ফাউণ্ডেশনের প্রকাশিত বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড আইন নং ৩৪৪ - “(স্বামীর জন্য) তালাক সঙ্ঘটিত হওয়ার জন্য সাক্ষী শর্ত নহে।” এবারে দেখুন সুরা ত্বালাক ২, স্ত্রী-তালাকের সময় - ‘তোমাদের মধ্য হইতে দুইজন নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখিবে।’ এই হলো কোরাণ লঙ্ঘন। হদ্দ বা হুদুদ হলো জ্বেনা, জ্বেনার অপবাদ, চুরি, ডাকাতি, মদ্যপান, রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ইসলাম ত্যাগ। দেখুন বিধিবন্ধ ইসলামি আইন ৩য় খণ্ড ৯১৪ গ - “হদ্দ-এর আওতাভুক্ত কোন অপরাধ করিলে ইসলামি রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করা যাইবে না।” হানাফি আইন হেদায়া-তেও এ-আইন আছে ১৮৮ পৃষ্ঠায়। এই হলো কোরাণ-লঙ্ঘন, এরকম বহু শারিয়া আইন আছে।


সরকার সহ সবাইকে বুঝতে হবে সাম্য ও সমান অধিকার এক নয়। কিন্তু সেই বাহানায় নারী-অত্যাচারও ইসলাম-সম্মত নয়। নারীর সমান উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ধর্ম ছাড়াও আর্থ-পারিবারিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক বহু জটিল সুতোয় টান পড়বে। কারণ নর ও নারীর জীবন, আশা-আকাক্সক্ষা, শরীর-মন, মানসিকতা, স্বপ্ন, চাহিদা, সমস্যা ও সমাধান শুধু আলাদাই নয় বরং কখনো কখনো পরস্পর-বিরোধীও হয়ে ওঠে। তাই সমান উত্তরাধিকার কেন ইসলাম-বিরোধী নয় সেটা জনগণকে পরিষ্কারভাবে বুঝানোর কোনই বিকল্প নেই। রেডিও-টেলিভিশনে খবরের কাগজে ক্রমাগত নিবন্ধ, বই ও বিশ্ববিখ্যাত প্রগতিশীল ইসলামি বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার দিয়ে জনগণকে জানাতে হবে। যাঁরা সমান উত্তরাধিকারের বিরুদ্ধে তাঁদের সাথেও দলিলভিত্তিক উন্মুক্ত আলোচনা হওয়া দরকার।
কেউ যদি কারো কথা না মানেন তবুও লা আকরাহা ফিদ্বীন-ধর্মে জবরদস্তি নেই-এটা মানতে হবে। ইসলামে মানুষ ও আল্লাহ’র মধ্যে কোনো দালাল নেই এটা মানতে হবে, নারীরা কারো চেয়ে কম মুসলিম নন এটাও মানতে হবে। এ-জন্যই এ-বিষয়ে নারীদের মতামতের জরিপ জরুরি। এবং সবচেয়ে জরুরি হল অন্যান্য দেশের নারীদের মতো নিজেদের ইসলামি নারী-সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে অধিকারের সংগ্রাম করা। এর কোনই বিকল্প নেই।

ইসলাম নিয়ে এ কাল খেলার শেষ হোক। বিশ্ব-মুসলিম আল্ কোরাণের শান্তিবাণী বুকে নিয়ে অমিতগর্বে উঠে দাঁড়াক অতীতের সামরিক শক্তিতে নয়, ক্ষমতার লড়াইয়ের ষড়যন্ত্রে নয়, মেধা এবং প্রেম-ভালবাসা-ক্ষমার শক্তিতে, ন্যায়বিচার ও নর-নারীর সমান অধিকারের শক্তিতে। আবারো বলছি, ইসলামের বহু ব্যাখ্যা সম্ভব কিন্তু যে ব্যাখ্যায় মানবাধিকার রক্ষা হয় সেটাই প্রকৃত ইসলাম। আমরা সবাই একসাথে চেষ্টা করলে আল্লাহ্ তায়ালা’র ওয়াদা আছে আমাদের সাহায্য করার এবং নেয়ামত ফিরিয়ে নেয়ার যদি আমরা চেষ্টা না করি - সুরা রা’দ ১১ , আনফাল ৫৩।



হাসান মাহমুদ
hasan@HasanMahmud.com

0 comments
Labels: ,

যীশু হলো একই সাথে আল্লাহর কালাম বা বাক্য ও রুহুল আল্লাহ বা আল্লাহর আত্মা। এটা কি ঠিক?

অবিস্বাশীরা বলে - ইসলামী ধারায় বিশ্বাস করা হয়- যীশু হলো একই সাথে আল্লাহর কালাম বা বাক্য ও রুহুল আল্লাহ বা আল্লাহর আত্মা। আল্লাহর কালাম বা বাক্য অর্থ হলো যীশুর সকল কথাই আল্লাহর বানী আর যীশুর পার্থিব দেহের ভিতরে যে আত্মা আছে তা হলো রুহুল আল্লাহ বা আল্লাহর আত্মা।

 - এই বিষয়ে কোরআনের আয়াত বা হাদিস নেই যে বলা হয়েছে যীশুর সকল কথাই আল্লাহর বানী আর যীশুর পার্থিব দেহের ভিতরে যে আত্মা আছে তা হলো রুহুল আল্লাহ বা আল্লাহর আত্মা।

 কোরআন বলে : নিঃসন্দেহে মরিয়ম পুত্র মসীহ ঈসা আল্লাহর রসূল এবং তাঁর বাণী যা তিনি প্রেরণ করেছেন মরিয়মের নিকট এবং রূহ-তাঁরই কাছ থেকে আগত। অতএব, তোমরা আল্লাহকে এবং তার রসূলগণকে মান্য কর। সুরা আন নিসা সুরা নং ৪ আয়াত ১৭১। মানে রুহ আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে আল্লাহর রুহ /আত্বা নয় আর যীশুর সকল কথাই আল্লাহর বানী নয়, দেখু আয়াতে বলেছেন তাঁর বাণী যা তিনি প্রেরণ করেছেন মানে সকল কথাই আল্লাহর বানী নয় ।

Christ's attributes are mentioned:
1- That he was the son of a woman, Mary, and therefore a man.
2- But a messenger, a man with a mission from Allah, and therefore entitled to honour.
3- A word bestowed on Mary, for he was created by Allah's word "Be" (kun....in Arabic), and he was.
4- A spirit proceeding from Allah, but not Allah. His life and his mission were more limited than in the case of some other Messengers, through we must pay equal honour to him as a prophet from Allah.

তারা আরো বলে নবি তো একজন মানুষ , তো সেই মানুষের বলা কথা যদি আল্লাহর কথা হয় , আর তার আত্মা যদি আল্লাহর আত্মা হয় তো সেই মানুষটা কে হবে ? আল্লাহই হবে। 

এই যুক্তি ধরলে তো সকল নবীকেই আল্লাহ হিসেবে মানতে হয় কারন তাদের কাছে যেহেতু আল্লাহর বানী এসেছে এবং সেটা তারা তাদের মুখেই প্রচার করেছেন। তাই নয় কি? আর আল্লাহর হুকুমে তো আমারও আত্বা তৈরি হয়েছে যখন আল্লাহ বলেন হও সেই হিসেবে নবীকে যেভাবে আত্বাটা দেয়া হয় আমাকেও সেই ভাবে আত্বা দেয়া হয়েছে তবে আমি মানুষটাও কি আল্লাহ? নাকি শুধু মাত্র আল্লাহর তৈরি বান্দা?

ইসলাম সম্পর্কে জানতে যেতে হবে আলেমদের কাছে।- কোরআন তো শুধু আলেমদের জন্য না সবার জন্যই কোরআনে কোথাও বলা নাই যে এইটা বুঝতে হলে আলেমদের কাছে যাও বরং কোরআনে বলা আছে এটা উপদেশ সকল মানুষের জন্য দেখুন করোআন সুরা আয়াত: 21:107, 38:87,4.174,17.9,12.104,21.106,17.89,49.13 এবং আরো অনেক আয়াত সমুহে সকল মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলা আছে।

ফয়সাল হাসান
faysalhasan2001@yahoo.com

0 comments
Labels: ,

ধর্ম কথাঃ সুরা নাস এ কি বলা আছে

বিসমিল্লাহির রাহ মানির রাহীম


قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
বলুন, আমি আশ্রয় চাইছি মানুষের প্রতিপালকের
Say :I seek refuge with the Lord of Mankind
[ ১]
مَلِكِ النَّاسِ
মানুষের অধিপতির,
The King(or Ruller) of mankind,
[ ২]
إِلَهِ النَّاسِ
মানুষের ইলাহের কাছে
The Ilâh ( or Judge ) of mankind
[৩]
مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ

আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে ,
From the mischief of the whisperer ( of evil) who withdraws ( after his whisper)
[ ৪]
الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
(The same) who whispers into the hearts of Mankind
[ ৫]
مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।
Among jinns and among men
[৬]




এটি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা মূলক সুরা । সরাসরি সাহায্য না চেয়ে ৩ টি গুন উল্লেখ করে বিনীত ভাবে সাহায্য চাওয়ার কথা বলা হয়েছে ।
আল্লাহকে বলা হয়েছে
মানুষের রব , বা প্রতিপালক
মানুষের মালিক বা অধিপতি
মানুষের ইলাহ বা মাবুদ (১,২,৩)।


এই তিনটি গুনের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার অর্থ হচ্ছে , আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাচ্ছি তিনি সমস্ত মানুষের প্রতিপালক , অধিপতি ,মাবুদ । তিনিই ,মানুষ কে রক্ষা করতে পারেন ।
তিনি ছাড়া আর কেউই নেই যার কাছে আমি পানাহ চাইতে পারি ।

কিসের অনিষ্ট হতে পানাহ চাওয়ার কথা বলা হয়েছে ?

আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দান করে । জ্বিনের মধ্যে থেকে বা মানুষের মধ্যে থেকে । (৪,৫,৬)

কুমন্ত্রণাদাতার কুমন্ত্রণা বা প্ররোচনা হতে । প্ররোচনাই হচ্ছে সমস্ত গুনাহের সূচনা বিন্দু । খুব নিভৃতে আত্মগোপন করে শয়তান মানুষের মনে প্রতিনিয়ত প্ররোচনা দিয়ে যায় । । কখন শয়তান আমাদের মনে কি করে আমরা কিন্তু বুঝে উঠতে পারিনা ।একজন অসতর্ক মানুষ ,প্ররোচিত হয়েই গোনাহের কাজ করে ফেলে ।
শয়তান কিন্তু প্রথমেই বড় টোপ ফেলে । আর সেই টোপ গিলে ফেলা মানুষ গুলো সমস্ত ধর্মিয় নিয়মকানুন , বিধিবিধান গুলো কে অসার মনে করে । নিয়মের বাহিরের কাজ গুলো কে সুন্দর আর সাহসী মনে হয় তাদের কাছে আর বলে "এখানে পাপ টা কোথায় ?" ধুর কিসের সৃষ্টিকর্তা ? সব মানুষের মনের কল্পনা । অর্থহীন ব্যাকডেটেড নিয়ম গুলো মানুষের তৈরি ।
মানুষ সরাসরি জড়িয়ে যায় নাস্তিকতা , শিরক , কুফরিতে । এধরনের টোপ গেলা মানুষ আমরা দেখেছি ।


কিন্তু আমরা যারা কালেমায় বিশ্বাস করি আমরা কিভাবে জড়িয়ে যাই?
শয়তান আমাদের ছোট ছোট নিয়ম ভঙ্গের কুপরামর্শ দিয়ে যায় । সবসময় ছোট ছোট গোনাহ করতে প্ররোচিত করে । এ চিন্তা মানুষের মনে দিয়ে দেয় , ছোট ছোট গুনাহ করে নিলে তেমন কোন ক্ষতি নেই ।
যেমন ,
ধুর , এটা কি গীবত হল , আড়ালে হলেও আমি ত সত্যি কথাই বলছি ।
থাক কাল থেকে ঠিক মত নামাজ পড়ব , আজ ভাল লাগছেনা । এটা আসলে ঘুষ না , এটা আমার প্রাপ্য ।
এভাবে ছোট ছোট গুনাহ করতে করতে আমরা গোনাহের সাগরে ডুবে যাই ।

এই প্ররোচনা দেয়ার কাজ জ্বিন শয়তান আর মানুষ শয়তান ও করে । এ সুরায় উভয়ের অনিষ্ট থেকে পানাহ চাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে । মানুষের নিজের নফসের শয়তান ও মানুষকে ভুল পথে চলে যাওয়ার জন্য প্ররোচিত করতে থাকে ।

আল কুরআনের আরো আয়াত আছে একই সাহায্য চেয়ে

সুরা আনআমে ১১২ আয়াতে আছে , " আর এভাবে আমি জ্বিন ও মানুষ শয়তানদের কে প্রত্যেক নবীর শত্রু বানিয়ে দিয়েছি , তারা পরস্পরের কাছে মনোমুগ্ধকর কথা ধোঁকা ও প্রতারণার ছলে কথা বলতে থাকে ।"

সুরা হা মীম সাজ-দাহ ,৩৬ আয়াতে আছে , " আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোন উস্কানি অনুভব কর তাহলে আল্লাহর পানাহ চাও ।"

" বলো , হে আমার রব ! আমি শয়তানদের উস্কানি থেকে তোমার পানাহ চাচ্ছি । "( আল মুমিনূন ৯৭)

সাহায্য চাইলে আল্লাহ আমাদের কিভাবে সাহায্য করবেন ?

" যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের অবস্থা এমন হয় যে , কখন শয়তানের প্রভাবে কোন অসৎ চিন্তা তাদেরকে স্পর্শ করলেও তারা সংগে সংগে সজাগ হয়ে যায় এবং তারপর ( সঠিক পথ ) তাদের দৃষ্টি সম্মুখে পরিষ্কার হয়ে উঠতে থাকে " সুরা আরাফ ২০১

সবসময় যেন আল্লাহর রহমতের ছায়া তলে থাকতে পারি , আমিন ।

ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা

আল কোরআন : ডিজিটাল ( ধর্ম মন্ত্রণালয় , গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ) আশা করি শানে নুযুল আর তাফসির যুক্ত করে সুন্দর এই সাইট টিকে আরো সমৃদ্ধ করা হবে ।

তাফহীমুল কুরআন মূলত বই থেকে সাহায্য নেয়া হয়েছে ।

সুরা নাস : বাংলা অনুবাদ , ব্লগার হিটলারের সাগরেদ 
Blog : ডাঃ নার্গিস পারভীন

0 comments
Labels: ,

ধর্ম কথা ; কুরআনে ব্যবহৃত উপমা সমূহ

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম ।পরম করুনাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে ।

কুরআনে সুন্দর সুন্দর উপমা ব্যবহৃত হয়েছে । উপমা নিয়ে আল্লাহ নিজে বলেন ,
সুরা বাক্বারা (২৬) ;" নিশ্চয় আল্লাহ লজ্জা বোধ করেন না , মশা বা তার চেয়ে তুচ্ছ বস্তুর উপমা দিতে । সুতরাং যারা ইমান এনেছে তারা জানে যে , এ উপমা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য ;
কিন্তু কাফেররা বলে যে , আল্লাহর এ উপমা দেয়ার উদ্দেশ্য কি ?
তিনি এর দ্বারা অনেক কে বিপথগামী করেন , এবং অনেক কে সৎ পথে পরিচালিত করেন ।
এরূপ উদাহরণ দিয়ে তিনি অবাধ্য লোকদের ছাড়া কাউকে বিপথগামী করেন না । "


সুরা বাক্বারার ৭৪ নং আয়তে আল্লাহ কাফেরদের মনকে পাথর অপেক্ষা কঠিন বলে অবিহিত করেছেন ।
এরূপ পাথর আছে যা থেকে সুশীতল পানি নির্গত হয় । কিন্তু কাফেরদের হৃদয় হতে জ্ঞান বা করুণার ধারা নির্গত হয়না । অন্যস্থান থেকেও তাদের অন্তরে প্রবেশ করেনা ।
পক্ষান্তরে বিশ্বাসীদের অন্তর থেকে জ্ঞান বা করুণার ধারা নির্গত হয়ে জগদ্বাসীকে শান্তি ও স্নেহ করুণা বিলায় ।

 আল্লাহর নিদর্শন দেখেও কাফেররা কি করে?

সুরা বাক্বারা , আয়াত ৭৪ , "এরপরেও তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেল ।
যেন তা পাথর বা তার চেয়ে ও কঠিন তর ;
কতক পাথর এমন যে তা থেকে নদী নালা প্রবাহিত হয় ,
আবার কোন কোন পাথর ফেটে যায়
এবং তা থেকে পানি বের হয় , আর কতক আল্লাহর ভয়ে পতিত হয় "



বাস্তব জীবনেও অনেক মানুষের দেখা পাওয়া যায় , যারা এত কঠিন , তাদের কে দেখলে এই আয়াত টির কথা মনে পড়ে । মনে হয় তাদের অন্তর পাথরের চেয়ে কঠিন । হিংস্রতা আর নিচুতা দিয়ে তারা এমনভাবে পরিবর্তিত হয়ে এত কঠিন হয়ে গেছে যে , পাথরকেও হার মানায় ।

সূত্র ঃ নূরানী কোর আন শরীফ , মীনা বুক হাউজ ।
Post Written by: ডাঃ নার্গিস পারভীন

0 comments
Labels: ,

প্রিয় কবির জন্মদিন সাথে কিছু পরিসংখান আগ্রহীদের জন্য


দরিদ্র অবহেলিত কবি, আমাদের উপরে কোন ক্ষোভ রেখো না, দিতে পারিনি তোমার প্রপ্প সম্মান করেছি কতো আপমান, ক্ষমা করো মোদের, তুমি তো বিদ্রোহী এই দুর্বলদের ঘুম ভাংগাতে চেয়েছো কিন্তু আমরাতো এমনই জাতি যে জেগে ঘুমায় তাকে উঠাবে কি করে ? যে চেস্টা তুমি করে গিয়েছো আমরাও করবো সে চেস্টা ঘুম আমাদের ভাংতেই হবে জেগে ওঠতেই হবে আমাদের --

কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান

১। নজরুল বাংলা ভাষায় সর্বাধিক “হামদ-নাত” এর রচয়িতা।
২। গ্রামোফোন কোম্পানী থেকে নজরুলের হামদ-নাত যখন বের হোতো, তখন মাঝে মাঝে রেকর্ডের ওপর “পীর-কবি নজরুল” লেখা থাকত।
৩। বাংলা ভাষায় যারা হামদ-নাত রচনা করে গেছেন, তাদের মধ্যে একই সাথে হিন্দু এবং ইসলাম ধর্ম উভয় বিষয়ে পারদর্শী কেউ ছিলনা, একমাত্র ব্যতিক্রম নজরুল।
৪। একাধিক আরবী-ছন্দ নিয়ে নজরুলের অসংখ্য কবিতা আছে, বাংলা ভাষার আরও এক প্রতিভাবান কবি ফররুখ আহমদ এ বিষয়ে কারিশমা দেখাতে পারেনি।
৫। ইরানের কবি হাফিজ আর ওমর খৈয়ামের যতজন ‘কবি’ অনুবাদক আছেন তার মধ্যে নজরুল একমাত্র মূল ফারসী থেকে অনুবাদ করেছেন, বাকী সবাই ইংরেজীর থেকে।
৬। “ফারসী” এবং “আরবী”তে নজরুল এর জ্ঞান ছিল পাণ্ডিত্যের পর্যায়ে।
৭। গ্রামোফোন কম্পানি থেকে “ইসলামি গান” নজরুলের পূর্বে আর কেউ গায়নি।

নজরুল জীবনের শেষ অধ্যায়

নজরুলের জীবনের একমাত্র সাক্ষাৎকার যেটা উনি ১৯৪০ সনে দিয়েছিলেন, চিরদিনের জন্য অসুস্হ হয়ে যাবার কিছুদিন আগে- সেখানে উনি বলেছিলেন, :

"মুসলমানরা যে একদিন দুনিয়াজোড়া বাদশাহি করতে সমর্থ হয়েছিল সে তাদের ইমানের বলে। আজ আমরা ইমান হারিয়ে ফেলেছি। ইমানের প্রকৃত অর্থ ‘পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পন’। ভারতে রাজা-বাদশাদের দ্বারা ইসলাম জারি হয় নাই। আর মানুষের মঙ্গলের বিধান করেছেন আউলিয়া ‘পীর’ বোজর্গান। সারা ভারতে হাজার আউলিয়ার মাজার কেন্দ্র করে আজো সেই শান্তির কথা আমরা শুনতে পাই। আমি মওলানা আকরম খাঁ ও মৌলবি ফজলুর হক সাহেবকে বলেছিলাম যে, আসুন, আপনারা সমস্ত ত্যাগ করে হজরত ওমর (রাঃ) ও আবুবকরের (রাঃ) আদর্শ সামনে রেখে সমাজে লাগি, আমি আমার সব কিছু ছেড়ে কওমের খেদমতে লাগতে রাজি আছি।” --অতীত দিনের স্মৃতি, সম্পাদনা - আব্দুল মান্নান সৈয়দ পৃষ্ঠা ১৯২,১৯৩

কাজী নজরুল ইসলাম:
জন্ম: ২৪শে মে ১৮৯৯ চুরুলিয়া গ্রামে আসানসোন বরদান জেলায়, তৎকালীন ওয়েস্ট বেংগল।
মৃত্যু: ২৯ শে আগস্ট ১৯৭৬ সালে ৭৭ বছর বয়সে ঢাকা, বাংলাদেশে।

এই পোস্ট লিখতে সদালাপের এই পোস্ট হতে সাহাজ্য নেয়া হয়েছে http://www.shodalap.org/deshebideshe/13308

0 comments
Labels: , , ,

নারী বিষয়ে কিছু জিগ্গাসা প্রশ্ন উত্তর - আসুন দেখি সত্যের চোখে

1। একসাথে চার বিয়ে করাও বৈধ: হ্যা তবে শর্ত সাপক্ষে আর বউদের অনুমতি নিয়ে আর তখনি যখন পুরুষের তুলনার নারী বেশী বা বা নারীদের রক্ষার\সহায়তার জন্যে কেহ নেই যেমন টা হয়েছিল ওহুদের যুদ্ধে যেখানে অনেক সাহাবী শহীদ হন আর তাদের স্ত্রীরা বিধবা হয়ে পড়েন, আর আজকাল যারা করছে তারা নিছক কোন কারন ছারাই করছে শুধু ইসলামটাকে ইউজ করছে নিজের জন্য। আর পৃথিবীতে এত মুসলমান দের মধ্য চারবিয়ে করা কয় জন পাবেন এর আনুপাতিক হার কত তা জানলে বুজবেন নিশ্চই। আপনার চার পাশেই দেখুন কতজন মুসলমান চার বিয়ে করেছে?

আর অনেকে আধুনিক সমাজের সমালোচনা করেও বলেন প্রতি রাতে বা উইকেন্ডে এক নারী কে ইউজ করা থেকে চার নারীকে সামাজিক স্বীকৃতি দিয়ে তাদের কে সামাজিক ও অথনৈতিক ভাবে টেক কেয়ার করার নিশ্চয়তা দিয়ে তাদের কে বিয়ে করে বউ করাটা উত্তম নয় কি? [আমি কিন্তু একজন নিয়েই সন্তুস্ট]

2।নারী পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে: কোরআনের আগে কোনো ধর্মগ্রন্থে নারী-পুরুষকে সমান-সমান সম্পত্তি দেয়া তো দূরে থাক নারীকে আদৌ কোন সম্পত্তিই দেয়া হয়নি। এমনকি মুসলিমদের মধ্যে অনেকেই তাদের নারীদেরকে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তিও দেয় না। এই যখন বাস্তবতা তখন ‘অর্ধাংশ’ নিয়ে হৈ-চৈ করার তো কোনো মানে হয় না। দ্বিতীয়ত, সার্বিকভাবে সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে কোরআনে নারীকে কিছুটা কম সম্পত্তি দেয়ার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে (৪:৭, ৪:১১-১২, ৪:৭৬)। যেমন:

- কোরআনে নারী-পুরুষ উভয়কেই রোজগারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে (৪:৩২) অথচ পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের দায়িত্ব শুধু পুরুষের ঘাড়েই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে (৪:৩৪)। অর্থাৎ একজন নারী যা রোজগার করবে সেটা তার নিজস্ব কিন্তু পুরুষের রোজগার থেকে সংসারের সকল প্রকার খরচ বহন করতে হবে। নারীকে কি এখানে বিশেষ সুবিধা দেয়া হলো না? পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের ভার নারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হলে গোঁড়া সমালোচকদের সারা জীবনের ঘুমই হয়ত হারাম হয়ে যেত!

এটা নিশ্চই খারাপ কিছু নয় কারন সে পিতা ও স্বামির কাছ থেকেও পাচ্ছে আর তার টেককেয়ার করার জন্য প্রথমে পিতা এবং পরে স্বামির দায়িত্ব সো তার সিকুইরিটি কম কোথাও হচ্ছেনা বলে মনেকরছি।

3। আল্লার পরে কেউ যদি এবাদতের দাবীদার হয় সে হবে স্বামী বা স্বামীর পায়ের নীচে স্ত্রীর বেহেস্ত - এটা একটি জাল হাদিস আসলটি হলো মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেস্ত এবং কোরআনে অনেক আয়াত আছে যে আল্লাহর পড়ে পিতামাতার স্থান স্বামির নয় দেখুন কোরআনে বলে "তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদের সাথে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।" ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৩.

4।নারীদের জন্য সব কালা আইন, নারীর রোম দেখলো পুরুষ- গুনাহ হোলো নারীর, পুরুষের লোলুপ চোখ নারীদেহের বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করলো-পাপ হোলো নারীর এর জন্য দেখুন:

"হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও, তবে অনুমতি গ্রহণ না করা পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করো না। যদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে ফিরে যাবে। এতে তোমাদের জন্যে অনেক পবিত্রতা আছে এবং তোমরা যা কর, আল্লাহ তা ভালোভাবে জানেন।"-সুরা নূর এর আয়াত-২৭-২৮

সুরা নং ২৪ সূরা আন-নূর আয়াত নং ৩০ ই যথেস্ট:"মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।"

আর নারীদের জন্য আর হিজাবের সীমার ব্যাপারে বলা হয়েছে আয়াত-৩১ এ এইভাবে,

"ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।"

এখন দেখান হিজাব বলতে কোন জায়গায় বলা আছে নারীকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকতে হবে বা কোথায় বাহিরে যাবার জন্য বা কাজ করার জন্য নিষেধ করা হয়েছে আরো দেখেন

'' হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী-গণকে, কন্যগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রী-গণকে বলুন, তারা যেনো চাদরের কিয়দংশ দিয়ে তাদেরকে ঢেকে রাখে; যেন তাদের চেনা সহজ হয়।'' -আল কোরআন। সুরা-৩১, আয়াত-৫৯।

বর্তমানে যে শুধুমাত্র সমস্ত মুখ ঢেকে বোরকা বা হিজাব পড়ে,তা কোরআনের ঐ আয়াতের সাথে কতোটুকু সামজস্য/মিল বিদ্যমান?

যারা নারীর পোশাকের দোষ দেয় তাদের জন্য কোরআনে আগে ছেলেদের কে সাবধান হতে বলা হয়েছে তার পর নারীদের পর্দার আয়াত সো আগে ছেলেদের দৃষ্টি নত রাখতে শিখান পরে মেয়েরা খালি গায়ে ঘুরলেও কেহ ধর্ষন করবেনা যদি সে প্রকৃত মুমিন হয়। কারন সে জানে -নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

5। নারী শব্দটাই শাস্ত্রের কাছে একটি পাপবাচক শব্দ
"নারী অমংলজনক" প্রশ্নে কোরআনে আমার জানা মতে কোথাও নারীদের অমংগলজনক বলা হয়নি বরং কোরান মহিলাদেরও অন্তর্ভুক্ত করে এভাবে যেমন বিশ্বাসী মানুষ এবং বিশ্বাসী মহিলা - - সম্মানিত পুরুষ এবং সম্মানিত মহিলা।

The Quran declared: O’ Men & Women! You have a common origin. [4:1]হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী (৪) সূরা আন নিসা আয়াত নং ১

“… All of you, men and women, belong to the same single stock.” [49:13]হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (৪৯) সূরা আল হুজরাত আয়াত ১৩

The believers, both men and women, are colleagues one of another. [9:71]আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।(৯) সূরা আত তাওবাহ আয়াত নং ৭১

"Women have rights unto you as you have rights unto them." [2:187]তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ।(২) সূরা আল বাক্বারাহ আয়াত ১৮৭

"Every person will be rewarded according to one's actions, male or female." [4:32]আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর।নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত। (৪) সূরা আন নিসা আয়াত ৩২

তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৪

আপনি বলুনঃ এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তাএই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রেøর কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ। ৬) সূরা আল আন-আম ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ১৫১

And the exalted Prophet taught: আর মহানবী আমাদের শিক্ষা দেন যে

- Paradise lies at the feet of your mothers: "মায়ের পায়ের নীচে বেহেস্ত"---Kashf al-Khafa', no. 1078; Al-Da'ifah, no. 593.

- The best among you is the one who is best to his wife.
তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম

- O’ Men! You will be questioned about your treatment of women. " হে মানুষ তোমাদের কে জিগ্গেস করা হবে তোমরা নারীদের প্রতি কেমন আচরক করতে সে বিষয়ে

The Prophet said, "Whoever believes in Allah and the Last Day should not hurt (trouble) his neighbor. And I advise you to take care of the women, for they are created from a rib and the most crooked portion of the rib is its upper part; if you try to straighten it, it will break, and if you leave it, it will remain crooked, so I urge you to take care of the women." (Sahih Bukhari, Volume 7, Book 62, Number 114)

একজনের কমেন্ট তুলে ধরছি একটি ইসলামি সাইট হতে :"Men must also have in mind that a woman has her rights within the boundary of Islam. Men have to know the best of ways to treat a women well. If he does not do his rights properly, he can't force her to the bed only to fulfill his lust taking those hadith for granted. He must also fear the dangerous torments that Allah has kept for him if he does anything unjust for her. The Prophet (saw) said once "the best of you (men) are those who are best to their wives". The husband can earn good names in the community or the the family, but it will not be worth in the sight of Allah if he does not earn a good name from his wife aswell. Same goes to women. Islam has kept all rules balanced to both husband and wives. For more about. Husband wife bonds, go to youtube and search half our deen by baba Ali and watch the whole series.

ফয়সাল হাসান
faysalhasan2001@yahoo.com

0 comments
Labels: ,

কাবায় মুশরিকদের প্রবেশ নিষেধ ?

অনেকে প্রশ্ন করেন কাবায় কবে শুনেছেন কোন বিধর্মী প্রবেশ করেছে। মুশরিকদের প্রবেশ নিষেধ নবী মুহাম্মদের আমল থেকে সেটা মিথ্যা?


এটা নিয়ে বিভিন্ন ভাবে উত্তর দেয়া হয়েছে আমি তো জানি শিখদের গুরু নানক মক্কায় গিয়েছিলেন দেখুন এখানে http://www.sikhiwiki.org/index.php/Guru_Nanak_in_Mecca

আরো পাবেন : The Ottoman Empire ruled by the law of Hanafi and they were responsible for the cities of Mecca and Medina and the empire lasted from 1229-1923. In an article of mughal-ottoman relations during the reign of Akbar an interesting note on Hajj stated in an early document state that: 'No Muslims and believers in the unity of God', proclaims an Ottoman imperial firman, 'should be hindered in any way if he wishes to visit the Holy Cities and circumambulate the luminous Ka'ba.'42 ,42. M.D., vol. 6, f. 17, firman no. 39, 1564-5, quoted by Faroqhi, op. cit. 147.

Where the idea of unity of God being ruihana (light coming out of face/hallo), enlightned, mukht, having experienced the 7th heaven from sufi perspective of Tawhid/fanna/wajjad-al-wahud. This theology of the Ottoman empire came from the theology of Jalĝl ad-Dīn Muḥammad Rūmī - the collapase of the ottoman empire is believed to be done by the British by divide and conquer in which they created the ideology of "wahhabism".

Notice there is a distinction between muslims and non-muslim monotheists. One of the 4 sunni schools also say that only polytheists (idol worshippers) are banned from the city of Mecca.

By Shaykh Faraz Rabbani - From Sunnipath.com - http://qa.sunnipath.com/issue_view.asp?HD=1&ID=5101&CATE=239 " In the Name of Allah, Most Merciful and Compassionate

In the Hanafi school, it is permitted for non-Muslims to enter all mosques, including the Haram of Mecca, as they interpreted the Quranic verse

009.028 O you who believe! The idolaters only are unclean. So let them not come near the Inviolable Place of Worship after this their year.

To be a specific prohibition against them entering as they did before Islam in the Days of Jahiliyya, in which they entered with their idols, manifested their polytheistic worship, and engaged in reprehensible actions such as performing tawaf while naked. [Sarakhsi, Sharh al-Siyar al-Kabir, 1.134-135; Ibn al-Humam/Marghinani, Fath al-Qadir `ala al-Hidaya, 10.63] As for the idolaters being unclean (najas), that refers to spiritual uncleanness due to their beliefs rather than physical uncleanness. [Jassas, Ahkam al-Quran; Kasani, Badai` al-Sanai`]

আমার প্রশ্ন আপনি বা অমুসলিমরা কেন মক্কায় যেতে চান?

 এটা তো কোন টুরিস্ট প্লেস নয় ,আর খ্রিস্টান , জিউসদের অনেক স্থানে আছে যেখনে সবাই যেতে পারেনা , সাধারন ভাবে আমি যা জানি যে নিষেধ করা হয়েছে যাতে সেখানে আল্লাহ ছারা অণ্য কারো উপাসনা না হয় ,আর কাবা এটা পবিত্র স্থান তাই এটার পবিত্রতা রক্ষার্থে যদি সবাই মিলে আলোচনার জন্য যেতে চান সেটাতে আমি কোন সমস্যা দেখিনা মানুষের কল্যানে সবাই মিলে যদি একস্থানে জরো হয় যেমন আমরা ব্লগে ভিন্ন মতের সবাই আলোচনার মাধ্যেমে সত্য প্রকাশের চেস্টা করছি সেটা হলে কি ভালো হয় না ।

সুরা আল ইমরান ৩ আয়াত ৯৬ দেখুন " নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়

ফয়সাল হাসান
faysalhasan2001@yahoo.com

0 comments
Labels: , , ,

ইসলামের পথে জিহাদ করলে স্বর্গে অসংখ্য(৭২+) হুর গেলমান পাওয়া যাবে

ইসলামের পথে জিহাদ করলে স্বর্গে অসংখ্য(৭২+) হুর গেলমান পাওয়া যাবে, এ বিষয়ে.।

দেখুন পরিচ্ছন্ন সঙ্গিনীগণ / হুর প্রসংগে :কোরআনে হুরিস শব্দ চার বার ব্যবহার করা হয়েছে, যার অনুবাদে পরিবরর্তন হয়ে কালো চোখের, সুন্দর বক্ষ এবং উজ্জ্বল, যৌনাবেদন কুমারী মেয়ে হিসেবে পরিণত করা হয়, যদিও মূল আরবীতে সেখানে সুধুমাত্র একটি কথা: হুরিস। না সুন্দর বক্ষ না উজ্জ্বল, যৌবন কুমারী মেয়ে।

এখন এটি মনে হয় হতে পারে শুদ্ধ (পিওর) কিছু- যেমন ফেরেস্থা – অথবা গ্রীক করউস (Kouros or Kórē) এক অনন্ত যৌবন(পুরুষ/নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই) , কিন্তু সত্য হল কেউ জানিনা , এবং সেটাই মুল বিষয় কারন কোরআন একদম পরিষ্কার যখন বলে “ একটি নতুন তৈরি কৃত প্রজাতি, আবার তোমাদের তৈরি করা হবে যা সম্পর্কে তোমরা জানো না” যা মনে হয় আরো আবাদনময়ি কুমারী মেয়ে থেকে। (আপনি একবার চিন্তা করেন আপনি হয়তো ৭২ হুর বা ওদের মতে যুবতী মেয়ে নিয়ে খুশি থাকতে পারেন একবার ভাবুন এই একই বিষয়ে আপনার বৈ কি খুশি হবে, বা আপনার মা বা আপনার বাবাকে কি আপনি ৭২ যুবতীর সাথে দেখ খুশি হবেন? ইসলামে এমন খারপ ভাবে কখনো বলেনি বরং এখানে দেখুন :

As regards the word húr, it is a plural of ahwar (applied to a man) and of haurá’ (applied to a woman), signifying one having eyes characterized by the quality termed hawar, which means intense whiteness of the white of the eye and intense blackness of the black thereof.

The word ahwar (singular of húr) also signifies pure or clear intellect (Lane’s Lexicon). The other word, ‘ín, is plural of a‘yan (meaning a man wide in the eyes) and of ‘ainá’ (meaning a woman beautiful and wide in the eye). The latter word also signifies a good or beautiful word, or saying (Lane’s Lexicon). It may be noted that whiteness is also a symbol of perfect and unsullied purity, and hence the two words húr and ‘ín really stand for purity and beauty; and therefore, instead of white-eyed and large-eyed ones, I adopt the words pure and beautiful ones, as being more expressive of the true significance.

To realize the true significance of these words, two points must be borne in mind. The first is that paradise is a place for faithful women as well as for faithful men, and hence the Holy Quran often speaks of the faithful as being in paradise with their wives; see for instance 36:56, where the faithful are spoken of as sitting on thrones or raised couches with their wives, or 13:23 and 40:8, where they are spoken of as being in paradise along with their wives and offspring.

The second is that the blessings of paradise are alike for women and men, there being not the least difference in this respect between the two sexes. The question then is what is meant by húr ‘ín here. It has already been explained that the Holy Quran does not speak of any conjugal relations being maintained in a physical sense in the life to come. Moreover, it has been shown on various occasions that, where the blessings of paradise are spoken of, these are nothing but physical manifestations of the spiritual blessings which the doers of good enjoy in this life too. There are gardens, trees, rivers, milk, honey, fruits and numerous other blessings spoken of as being met with in paradise, but that all these are not things of this life has been shown more than once in these footnotes, and a saying of the Holy Prophet already quoted makes it clear that the blessings of paradise are not the things of this life) সুত্র http://www.muslim.org/islam/hur.htm

এবং অনেকে যে ৭২ জনয হুর সম্পকে বলে সেই নাম্বার ৭২ কখনো দেখা যায়নি কোরআনে ৭২ কুমারির ধারনা শুধু আসে ৩০০ বছর পরে।

যারা জান্নাতীদের খেদমত করবে, তারা তো ‘গিলমান’ এই বিষয়ে :

যেই আয়াত বলেছেন 52.24 সুরক্ষিত মোতিসদৃশ কিশোররা তাদের সেবায় ঘুরাফেরা করবে। 
এখানে এই কিশোরেরা হবে আমাদের সন্তানরা কারন দেখুন সুরা রাদ সুরা নং ১৩ আয়াত ২৩: তা হচ্ছে বসবাসের বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরা। ফেরেশতারা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে।

আরো দেখুন সুরা আত তূর সুরা নং ৫২ আয়াত নং: ২১ যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।) And their children like pearls, playful, happy around them. [13:23, 52:21, ]


স্বর্গ হচ্ছে তাঁর উলটো এটা কুমারী মেয়ে নয় এটা ফিকান্দিটি (The quality or power of producing abundantly; fruitfulness or fertility. Productive or creative power: fecundity of the mind) স্বর্গ হচ্ছে সবার সমঅধিকারের জায়গা, যা বিশাল, অফুরন্ত, স্বর্গ হচ্ছে বাগান যার মাঝে রয়েছে পানি প্রবাহিত ঝরনা ধারা চির শান্তির স্থান।

ফয়সাল হাসান
faysalhasan2001@yahoo.com 

0 comments
Labels: , , ,

পুরুষরা হলো নারীদের প্রভু ও নারী শিক্ষা - আসলে কোরআণ কি বলে

ইসলামে নাকি নারী শিক্ষাকে নিষেধ করে এবং পুরুষরা হলো নারীদের প্রভু এরকম দাবি করেন কিছু ইসলাম বিরোধী মানুষ, তারা তাদের দাবির স্বপক্ষে বলেন

কোরানের আয়াত : পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। সূরা নিসা - ৪: ৩৪

উক্ত আয়াতে সরাসরি নারীদের মর্যাদা সম্পর্কে বলেছে এবং বলেছে তাদের সাথে কেমন আচরন করতে হবে। আশা করা যায় কোন তথাকথিত মডারেট মুসলমান দাবী করবে না যে এই আয়াত কোন প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছিল তা উল্লেখ পূর্বক ব্যখ্যা করতে। যদি কেউ সেই উদ্ভট দাবী করে , সে যেন সেই কথিত প্রেক্ষাপট উল্লেখ করেই উক্ত আয়াতটির ব্যখ্যা করে এখানে। যাহোক উক্ত আয়াত থেকে যে বিষয়গুলো পরিস্কার বোঝা যায় তা হলো -

এক ) পুরুষরা নারীদের ওপর কর্তৃত্ব করবে তথা পুরুষরা হলো নারীদের প্রভু।
দুই ) নারীদের ভরণ পোষনের দায়ীত্ব পুরুষদের ওপর ন্যস্ত।
তিন) সর্ব অবস্থা্য়ই নারীরা পুরুষদের প্রতি আনুগত্য করবে ও পর্দা করে থাকবে।
চার) যদি কোন স্ত্রীর মধ্যে অবাধ্যতার চিহ্ন দেখা যায় , প্রথমে সদুপদেশ , তারপর শয্যা ত্যাগ এবং শেষে তাকে মারধর করতে হবে।


উক্ত বিষয়গুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে , নারীদের ভরন পোষনের দায়ীত্ব যেহেতু পুরুষদের ওপর তাই তার বাইরে কাজ করে অর্থ উপার্জন নিস্প্রয়োজন। অর্থ উপার্জন করবে তো পরিবারের ভরন পোষনের কারনে কিন্তু সে দায়িত্ব যদি সম্পূর্ন পুরুষের উপর আল্লাহ ন্যাস্ত করে দেয় তাহলে নারীরা আবার অর্থ উপার্জন করবে কি জন্য ? মানুষ সাধারনত: উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে চাকরী বা অন্য নানা পেশার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য। শখ করে কেউ উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে পারে তবে তা খুবই বিরল ঘটনা। অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য চাকরী বা ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন যা মানুষের দরকার সংসার প্রতিপালনের জন্য। এখন যেহেতু নারীদের ওপর অর্থ উপার্জনের দায়ীত্ব ন্যস্ত নয় যা্ আবার আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত, তাহলে তাদের উচ্চ শিক্ষারও কোন দরকার নেই। সুতরাং তাদের স্কুল কলেজে পড়ারও কোন দরকার নেই। এজন্য সম্প্রতি পাকিস্তানে একটি বালিকা বিদ্যালয় বন্দ করে দেয়ার জন্য তালেবানরা হুমকি দিয়েছে।

চলুন তবে দেখি আসলে কি বলা আছে :পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। এই আয়াতে কিওয়াড হলো কৃর্তত্বশীল যার জন্য তারা বলছে  যে এক ) পুরুষরা নারীদের ওপর কর্তৃত্ব করবে তথা পুরুষরা হলো নারীদের প্রভু।

চলুন তবে কৃর্তত্বশীল শব্দটার মুলে দেখি মুল আরবি আয়াতে আছে قَوَّامُونَ যাকে কৃর্তত্বশীল অনুবাদ করা হয়েছে বাংলায় আসলে সেটা কি?

গুগুল অনুবাদ قَوَّامُونَ মানে Protectors and maintainers মানে অভিভাবক / রক্ষাকর্তা /পালক যেমন বাবার দায়িত্ব মেয়ের প্রতি থাকে সেই রকম দায়িত্ব প্রভু নয় এখানে পাবেন (4:34:2)qawwāmūna (are) protectors N – nominative masculine plural noun
http://corpus.quran.com/wordbyword.jsp?chapter=4&verse=34 দেখুন এখানেও প্রভু বলা হয়নি।

আরো আছে ইংরেজি অনুবাদ গুলো দেখুন :
004.034: YUSUFALI: Men are the protectors and maintainers of women,
PICKTHAL: Men are in charge of women,
SHAKIR: Men are the maintainers of women
KHALIFA: The men are made responsible for the women,
http://www.universalunity.net/quran4/004.qmt.html

তারা যেমনভাবে প্রভু /কৃর্তত্বশীল বোঝাচ্ছেন মানে পুরুষের কথা/ আদেশ অবশ্যই মান্য করতে হবে এমন কথা কোথাও পেলামনা বরং যা দেখতে পাচ্ছি পুরুষদের দায়িত্ব নারীর প্রতি দায়িত্বপূর্ণ আচরনের কথা রক্ষাকর্তা হিসেবে তাকে সর্বদা সহায়তা করা।

আরো দেখুন কোরান মহিলাদেরও অন্তর্ভুক্ত করে এভাবে যেমন বিশ্বাসী মানুষ এবং বিশ্বাসী মহিলা - - সম্মানিত পুরুষ এবং সম্মানিত মহিলা।

The Quran declared: O’ Men & Women! You have a common origin. [4:1]হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী (৪) সূরা আন নিসা আয়াত নং ১

“… All of you, men and women, belong to the same single stock.” [49:13]হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (৪৯) সূরা আল হুজরাত আয়াত ১৩

The believers, both men and women, are colleagues one of another. [9:71] আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।সূরা আত তাওবাহ আয়াত নং ৭১

"Women have rights unto you as you have rights unto them." [2:187]তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। সূরা আল বাক্বারাহ আয়াত ১৮৭

কৃর্তত্বশীল /শ্রেষ্ঠত্ব কার এ বিষয়ে দেখুন : 
"Every person will be rewarded according to one's actions, male or female." [4:32] আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর।নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত।(৪) সূরা আন নিসা আয়াত ৩২

আল্লার পরে কেউ যদি এবাদতের দাবীদার হয় সে হবে স্বামী বা স্বামীর পায়ের নীচে স্ত্রীর বেহেস্ত - এটা একটি জাল হাদিস আসলটি হলো মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেস্ত এবং কোরআনে অনেক আয়াত আছে যে আল্লাহর পড়ে পিতামাতার স্থান স্বামির নয় দেখুন কোরআনে বলে "তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদের সাথে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।" ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৩. 

তবুও তারা বলে যে যেখানে  সূরা নিসা - ৪: ৩৪ আয়াতে পরিস্কার বলা হচ্ছে যে নারী যদি অবাধ্য হয় সেখানে তার স্বামী তাকে বেধড়কভাবে পিটাতে পারবে--

আমার প্রশ্ন বেধড়কর ভাবে কোথায় লিখা আছে আর এর আগে আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও,তাদের শয্যা ত্যাগ কর এগুলো তারা ভুলে যান!!!

তারা আরো বলে দুনিয়ার বড় বড় ইসলামী পন্ডিত যেমন ইমাম গাজ্জালী - এরা এভাবেই বিষয়টার ব্যখ্যা করে গেছে।

তাই যদি হয় তবে দেখান মোহাম্মদ(সঃ) বা কোন নবী বা চার খলিফার মধ্যে কে কে তাদের বউকে বেধড়কভাবে পিটাইসে / মারধর করেছে ? ইমাম গাজ্জালী নিশ্চই তাদের থেকে বেশি জানে না ।

কোরআন হতেই বলি : সুরা নিসা আয়াত ১৯ এ দেখুন "কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।" দেখুন প্রকাশ্যে অশ্লীলতার জন্যও মারতে বলা হয় নি তবে কিভাবে ৪: ৩৪ কথা না শুনলেই মারার কথা বলতে পারে?

সুরা আর রুম আয়াত ২১ এ "আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।" কি বলছে শান্তি ও সম্প্রিতি ও দয়া নয় কি? মারার কথা নেই ।

আর সুরা বাকারা তেও সেই কথা সুরা বাকারা আয়াত ২৩১এ দেখুন নারীদের সাথে না মিললে কি করতে বলা হয়েছে "আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে আটকে রেখো না। আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদেরই ক্ষতি করবে। "

সুরা নুর আয়াত ২৬ "দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। " দুশ্চরিত্রা নারীকেও মারতে বলা হয়নি।

আর হাদিস দেখুন :Narrated Mu'awiyah al-Qushayri: "I went to the Apostle of Allah (peace_be_upon_him) and asked him: What do you say (command) about our wives? He replied: Give them food what you have for yourself, and clothe them by which you clothe yourself, and do not beat them, and do not revile them. (Sunan Abu-Dawud, Book 11, Marriage (Kitab Al-Nikah), Number 2139)"

Narrated Mu'awiyah ibn Haydah: "I said: Apostle of Allah, how should we approach our wives and how should we leave them? He replied: Approach your tilth when or how you will, give her (your wife) food when you take food, clothe when you clothe yourself, do not revile her face, and do not beat her. (Sunan Abu-Dawud, Book 11, Marriage (Kitab Al-Nikah), Number 2138)"

Abu Huraira (Allah be pleased with him) reported Allah's Apostle (may peace be upon him) as saying: "He who believes in Allah and the Hereafter, if he witnesses any matter he should talk in good terms about it or keep quiet. Act kindly towards woman, for woman is created from a rib, and the most crooked part of the rib is its top. If you attempt to straighten it, you will break it, and if you leave it, its crookedness will remain there. So act kindly towards women. (Translation of Sahih Muslim, The Book of Marriage (Kitab Al-Nikah), Book 008, Number 3468)"

তবুও অনেকে বিভিন্ন হাদিস দেখাবে নারীকে মারা জায়েজ দেখাতে কিন্তু কোরআনে এ টা বলা হয়নি এবং রাসুল (সঃ) এমনটি করেননি তাই সেগুলো সঠিক নয় বলা যায় আর হাদিসেব ব্যপারে কোন হাদীস যদি কোরআনের বিপক্ষে যায় তবে সেটা অবশ্যই সত্য নয় বলে গন্য হয়।

শিক্ষা বা জ্ঞান অর্জনের বিষয়ে:  মুমিনগণ, যখন তোমাদেরকে বলা হয়ঃ মজলিসে স্থান প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দিবেন। যখন বলা হয়ঃ উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর। সুরা আল মুজাদালাহ আয়াত ১১ -এখানে দেখুন তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত বলা হয়েছে বলা হযনি যে পুরুষের মধ্যে মানে নারী পুরুষ দুজনেই যারা জ্ঞানী বা জ্ঞান লাভ করেছে তাদের উচ্চ মর্যদা ।

আল্লাহ কুরআনে অসংখ্যবার জ্ঞানার্জনের গুরুত্বের কথা বলেছেন। যেমন, "আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাময়।" (কুরআন, ৩৫:২৮)

অবিশ্বাসীরা বলে কোরান বা হাদিসের কোথাও যদি জ্ঞানের কথা বলে সে জ্ঞান হলো ইলম তথা দ্বীনের জ্ঞান তথা ইসলামের জ্ঞান। অন্য কোন জ্ঞান না।

--যদি শুধু ইসলামি জ্ঞানের কথা বলা হতো তবে নিচের আয়াত গুলোতে কেন দুনিয়ার বিষয় নিয়ে বর্ননা করা হয়েছে জানার জন্য , সেটা নিয়ে ভাবার জন্য সর্বোপরী সকল বিষয়ে জ্ঞানের জন্য নয় কি?

সুরা রাদ আয়াত ১৭ তে কোন জ্ঞানের কথা বলা আছে দেখন দুনিয়ার জ্ঞান নয় কি? "তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর স্রোতধারা প্রবাহিত হতে থাকে নিজ নিজ পরিমাণ অনুযায়ী। অতঃপর স্রোতধারা স্ফীত ফেনারাশি উপরে নিয়ে আসে। এবং অলঙ্কার অথবা তৈজসপত্রের জন্যে যে বস্তুকে আগুনে উত্তপ্ত করে, তাতেও তেমনি ফেনারাশি থাকে। এমনি ভাবে আল্লাহ সত্য ও অসত্যের দৃষ্টান্ত প্রদান করেন। অতএব, ফেনা তো শুকিয়ে খতম হয়ে যায় এবং যা মানুষের উপকারে আসে, তা জমিতে অবশিষ্ট থাকে। আল্লাহ এমনিভাবে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।"এখানে উল্লেখিত আকাশ, স্রোত, আগুনে উত্তপ্ত করে তৈজস পত্র কোন ইসলামী জ্ঞানের কথা বলে বলবেন কি?

এবং এখানে দেখুন কোন ইসলামি জ্ঞানের কথা বলা আছে "পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন , সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।" এখানে বলা হয়নি ইসলামি জ্ঞানের শিক্ষা এখানে মানুষ সৃস্টির শিক্ষার কথা কি বলা হয় নি?

এবং সুরা নাহল আয়াত ৭৮-৮০ পর্যন্ত ইসলামী জ্ঞানের কথা গুলো দেখুন "আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করেছেন। তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর দিয়েছেন, যাতে তোমরা অনুগ্রহ স্বীকার কর। তারা কি উড়ন্ত পাখীকে দেখে না? এগুলো আকাশের অন্তরীক্ষে আজ্ঞাধীন রয়েছে। আল্লাহ ছাড়া কেউ এগুলোকে আগলে রাখে না। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসীদের জন্যে নিদর্শনবলী রয়েছে। আল্লাহ করে দিয়েছেন তোমাদের গৃহকে অবস্থানের জায়গা এবং চতুস্পদ জন্তুর চামড়া দ্বারা করেছেন তোমার জন্যে তাঁবুর ব্যবস্থা। তোমরা এগুলোকে সফরকালে ও অবস্থান কালে পাও। ভেড়ার পশম, উটের বাবরি চুল ও ছাগলের লোম দ্বারা কত আসবাবপত্র ও ব্যবহারের সামগ্রী তৈরী করেছেন এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। "

সুরা ত্বোয়া হা আয়াত১১৪ "সত্যিকার অধীশ্বর আল্লাহ মহান। আপনার প্রতি আল্লাহর ওহী সম্পুর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কোরআন গ্রহণের ব্যপারে তাড়াহুড়া করবেন না এবং বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।"


আর সুরা নিসার সেই আয়াত এর অনুবাদটা এভাবে কখনো ভেবে দেখেছেন: Men are the protectors and supporters of women. They shall take full care of women with what they spend of their wealth. God has made men to excel in some areas and women to excel in some areas. Men should ensure that women are able to stand at their feet in the society. So, righteous women are obedient to God’s Ordinances and guard the moral values even in privacy, the values that God has commanded to be guarded. If you experience ill-treatment from them, apprise them of possible consequences. Next, leave them in their resting places, and refer them to the appropriate authority (or arbiters). If they pay heed to you, do not seek a way against them. God is Most High, Great.

[দেখুন নিচে কিছু আরবী = তার অর্থ (কোরআনের অন্যান্য আয়ায় যেখানে সেই অর্থ  বা সম্পুরক কথা ব্যবহার হয়েছে) Qawwam = Protector = Maintainer = One who helps others to stand at their feet. Nushooz = Ill-treatment = Rebellion = To stand up (2:259, 58:11) = To stand up against virtue = Mental abuse = Domestic violence = To rebel against the permanent moral values. Wa’az = Admonishment = To apprise of consequences (2:231,3:66). Dharb = Example (13:17, 16:74, 36:13) = To stop or prevent (8:11, 43:5)= Referring to arbiters (4:35) = To give examples (4:34, 13:17, 16:74, 36:13, 43:58) = To withdraw (43:5) ]

ইসলামে নারীর সম্মান ও অবদান কখোনোই কম ছিলোনা সেটা কবি নজরুল ঠিকই বুঝেছিলেন তাইতো তার কথায় শুনতে পাই

"কোন কালে হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারী,
প্রেরনা দিয়েছে শক্তি দিয়েছে বিজয় লক্ষী নারী"
-- কাজী নজরুল ইসলাম


ফয়সাল হাসান
faysalhasan2001@yahoo.com 

0 comments
Labels: , ,

কোরআনে কি অ-প্রয়োজনিয় অক্ষর ব্যাবহার করা হয়েছে ?


প্রচলিত আরবি কোরান পড়তে গেলে দেখবেন অ-প্রয়োজনিয় আরবি কিছু অক্ষর অনেক যায়গায় ব্যাবহার হয়েছে।-- আসলেই কি অপ্রয়োজনীয় 

 আর যদি অপ্রয়োজনীয় হয়ে থাকে তবে কেন সেখানে দেয়া হয়েছে ? আল্লাহ কি মানুষের সাথে মশকরা করেন নাকি মানুষ যাতে জানার চেস্টা করে তার জন্য দিয়েছেন ?

আমি যা জানি সেটা তুলে ধরছি বাকি আল্লাহ ভালো জানেন:  সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য ব্যখ্যা এই যে এই অক্ষর গুলো আল্লাহর গুন বা নাম অর্থ মিন করে. বিখ্যাত সাহাবী ইবনে আব্বাস এবং ইবনে মাসউদ এই মত কে সমর্থন করেন  উদাহরন স্বরুপ মাওলানা মোহাম্মদ আলি ওনার কোরআনের অনুবাদে এই অক্ষর গুলোকে আল্লাহর নামের গুন অনুযায়ী আনুবাদ করেন:

১। প্রথমত আপনি সুরা বাকারা সুরা নং ২ আয়াত নং ১ এ দেখুন আছে আলিফ লাম মিম অনেক অনুবাদক এমনি রেখে দিয়েছেন কিন্তু আমরা জানি আল্লাহ তার ৯৯টি নাম আমাদের জানিয়েছেন আর এই নাম গুলো তার গুনের সমস্টি এখন আমরা এই অক্ষর গুলো যদি তার গুন হিসেবে ধরি তবে দেখবেন কেমন পরিস্কার অর্থ আসে

যেমন :আলিফ= আল্লাহ ,লাম= লাতিফ (অগাধ/ অতল / অথই ) মিম= মজিদ (মহৎ / বিশাল / বিস্তীর্ণ ) অর্থ করলে দাড়ায়

আল্লাহ যিনি মহৎ ,বিশাল যার রয়েছে অফুরন্ত তিনি জানেন তার বান্দার চাহিদা কি, তাই পথপ্রর্দশনের জন্য তিনি কোরআন নাযিল করেছেন ২ নং আয়াতেই দেখুন তিনি বলেন "এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,"

২। ঠিক তেমনি সুরা ৭ আয়াত ১ আলিফ লাম মিম সোয়াদ কেন আল্লাহর গুনের অর্থ দিয়ে দেখলে পাই আলিফ= আল্লাহ ,লাম= লাতিফ (অগাধ/ অতল / অথই ) মিম= মজিদ (মহৎ / বিশাল / বিস্তীর্ণ ) সোয়াদ= সাদিক (সত্য)
তার মানে  (আল্লাহ যিনি মহৎ ,বিশাল যার রয়েছে অফুরন্ত তিনি জানেন তার বান্দার চাহিদা কি, তিনি সত্য প্রকাশ করেছেন কোরআন) এবং এর পরেই দেখুন আয়াত ২ এ বলেছেন এটি একটি গ্রন্থ, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে করে আপনি এর মাধ্যমে ভীতি-প্রদর্শন করেন। অতএব, এটি পৌছে দিতে আপনার মনে কোনরূপ সংকীর্ণতা থাকা উচিত নয়। আর এটিই বিশ্বাসীদের জন্যে উপদেশ।

৩। আরো দেখুন সুরা ১১ আয়াত ১ আলিফ= আল্লাহ ,লাম= লাতিফ (অগাধ/ অতল / অথই ) রা= রাজিক (প্রদান কারী) আল্লাহ যার রয়েছে অফুরন্ত তিনি জানেন তার বান্দার চাহিদা কি, তিনি সত্য প্রদান করেছেন/ নাযিল করেছেন কোরআন এবং এর পরেই কোরআনের বর্ননা।

আলিফ, লা-ম, রা; এটি এমন এক কিতাব, যার আয়াত সমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত অতঃপর সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ হতে।

৪। ঠিক একই ভাবে সুরা ১৩ আয়াত ১ আলিফ= আল্লাহ ,লাম= লাতিফ (অগাধ/ অতল / অথই ) মিম= মজিদ (মহিমান্বিত/ মহৎ / বিশাল / বিস্তীর্ণ ) রা= রাজিক (প্রদান কারী) অর্থ আল্লাহ যার রয়েছে অফুরন্ত, যিনি মহৎ তিনি জানেন তার বান্দার চাহিদা কি, তিনি সত্য প্রদান করেছেন/ নাযিল করেছেন কোরআন এবং এর পরেই কোরআনের বর্ননা।
আলিফ-লাম-মীম-রা; এগুলো কিতাবের আয়াত। যা কিছু আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করে না।

৫। সূরা মারইয়াম সুরা ১৯ : আয়াত ১ থেকে পাই : কাফ= করিম(সম্মানিত) ,হা= হাদি (পথ প্রর্দশক), ইয়া=ইয়ামেন (প্রচুর/ উদার), আইন= আলিম(সর্বজ্ঞ), সাদ= সাদিক (সত্যবাদি)
 কাফ-হা-ইয়া-আইন-সাদ (সম্মানিত, পথ প্রর্দশক, উদার, সর্বজ্ঞ, সত্যবাদি আল্লাহ বলেন ) এটা (কোরআন) আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহের বিবরণ তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি।

৬। সূরা ইয়াসীন সুরা নং ৩৬ আয়াত ১: ইয়া= ও / হে ,  সীন= মানুষ : ও মানুষ ((ঠিক যেমন কোরআনের অন্য আয়াত সমুহে আল্লহ বলেন ইয়া আইয়ুহাল্লা জিনা আমানু : হে মানুষ )) তোমাদের প্রতি যে কোরআন অবতীর্ন করেছি   (O Human being to whom this Divine Writ is revealed!)  আয়াত ২ এর পর বলা হচ্ছে সেই  : (সেই )প্রজ্ঞাময় কোরআনের কসম।     

৭। সুরা হা মীম সেজদাহ সুরা নং ৪১ আয়াত ১ : হা= হাকিম(   জ্ঞানী/ বিজ্ঞ/ জ্ঞানসম্পন্ন) মিম=মাজিদ (মহিমান্বিত / গৌরবজনক/    ঐশ্বর্যশালী) H.M. Ha-Meem (Hakeem the Wise, Majeed the Glorious, states thatএবং পরের আয়াতেই দেখুন আবার বলা আছে এটা(কোরআন) অবতীর্ণ পরম করুণাময়, দয়ালুর পক্ষ থেকে।

এভাবে দেখলে দেখাযায় প্রত্যেক অক্ষর গুলো আল্লাহর গুন বা নাম অর্থ মিন করে এবং এসকল প্রত্যেক অক্ষরের পরেই আল্লাহ কোরআন সর্ম্পকে বলেন যা বোঝা যাচ্ছে যে আল্লাহ নিজের গুনের কথা বলে আমাদের কোরআনের কথা বলছেন এজন্য যে কোরআনই একমাত্র পথ প্রর্দশক যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহকে চিনতে পারি আমরা সঠিক পথে দিশা পেতে পারি যেমনটি তিনি বলেছেন  সুরা বাকারা আয়াত ২ " এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য:  এবং  সুরা হা মীম সেজদাহ আয়াত ২-৩ : এটা কিতাব, এর আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত আরবী ভাষায় কোরআনরূপে জ্ঞানী লোকদের জন্য। সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে, অতঃপর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা শুনে না। ।     

ব্যবহৃত অক্ষর ও তার অর্থ সমুহ :
Alif (ا): an abbreviation for Ana (أنا, I am)
Ḥā (ح): an abbreviation for Al-Ḥamīd (الحميد, the Praised),
Rā (ر): an abbreviation for the Seeing (رائي / رأى / رؤيا / يرى / بصير )
Sīn (س): as either an abbreviation for Man or an abbreviation for As-Samī' (السميع, the Hearing),
Ṣād (ص): an abbreviation for As-Ṣādiq (الصادق, the Truthful),
Ṭā (ط): as either an abbreviation for the Benignant or an interjection equivalent to O (in dialect),
ʿAyn (ع): an abbreviation for Al-'Alīm (العليم, the Knowing),
Qāf (ق): an abbreviation for Al-Qādir (القادر, the Almighty),
Kāf (ك): an abbreviation for Al-Kāfi (كافي, the Sufficient),
Lām (ل): an abbreviation for Allāh (الله, using the second letter),
Mīm (م): as either an abbreviation for Al-'Alīm (العليم, the Knowing, using the ending letter) or for Al-Majīd (المجيد, the Glorious),
Nūn (ن): a word meaning Inkstand,
Hā (ه): as either an abbreviation for Al-Hādīy (الهادي, the Guide) or an abbreviation for Man (in dialect), and
Yā (ي): an interjection equivalent to O.
সুত্র:https://en.wikipedia.org/wiki/Muqatta'at

তবুও পরিশেষে বলতে হয় আল্লাহ ভালো জানেন: আমরা তো শুধু চেস্টা করে যেতে পারি সঠিক ভাবে জানার জন্য।

ফয়সাল হাসান
faysalhasan2001@yahoo.com

0 comments