শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।

মুহাম্মদ (সাঃ)-আল্লাহর রাসূল

মুহাম্মদ (সাঃ)-সকল মানুষের জন্য উদাহরন, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, ও আল্লাহর রাসুল

আল কোরআন - মহান আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

আমাদেরকে সরল পথ দেখাও

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

আল্লাহ নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু

সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

Labels: ,

# কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য:পর্ব ১২ এবং এই গাছের কাছে যেওনা



আল্লাহ আদম (আঃ) কে বলেন

وَيَا آدَمُ اسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ فَكُلاَ مِنْ حَيْثُ شِئْتُمَا وَلاَ تَقْرَبَا هَـذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ الظَّالِمِينَ -- হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে এ বৃক্ষের কাছে যেওনা তাহলে তোমরা গোনাহগার হয়ে যাবে। ---সূরা আল আ’রাফ সুরা নং ৭ আয়াত নং ১৯।

এখানে এ বা এই গাছের কাছে যেওনা বলতে আরবিতে হাদিহি আল সাজারাহ ( هَٰذِهِ )Haadhi*hi al-shajarah – THIS tree/ এই গাছ।

এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ হজরত আদম (আঃ) কে বলেন এই গাছের কাছে যেওনা এই গাছ যার মানে বোঝাচ্ছে গাছটি আদম (আঃ) কে বেহেস্তে যেখানে আল্লাহ রেখেছিলেন তার খুব কাছেই ছিল।

যদি আল্লাহ বলতেন হে আদম -ঐ গাছের কাছে যেওনা বা আরবি শব্দ তিলকা ; ’tilka’ ( تلك ) ব্যবহার করতেন যা বোঝায় সেই । এখন আল্লাহ সেই গাছের কাছে যেওনা বললে বোঝাততো যে গাছটা দুরে ছিল আদম (আঃ) হতে।

দেখুন এই একটি শব্দ "এই" বা আরবিতে "হাদিহি" বোঝাচ্ছে আল্লাহ আদম (আঃ) পরিক্ষা করছিলেন গাছটা আদম (আঃ) বেহেস্ত যেখানে থাকতেন তার খুব কাছা কাছি রেখে। ঠিক যেমন আমাদের পরিক্ষা করেন এবং করছেন আমাদের ইচ্ছা/আকাক্ষাকে আমাদের কাছা কাছি রেখে, আমাদের কে ইচ্ছা অনুযায়ি কাজ করার ক্ষমতা দিয়ে।

এইযে আপনি এখন ইন্টারনেটে ব্লগ পড়ছেন সেটা আপনার ইচ্ছা অনুযায়ি আর এই আপনিই যদি চাইতেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই সময়টাকে আপনি ব্লগ না পড়ে যে কোন খারাপ সাইটে বা বাজে কাজে সময়টাকে ব্যবহার করতে পারেন তো ইচ্ছাটা আপনার আর সেই ইচ্ছাই নির্ধারন করে আপনার আমার পরকালের শেষবিচারের ফলাফল।

আল্লাহ যেমন আদম (আঃ) এর কাছাকাছি নিষিদ্ধ গাছ দিয়ে পরিক্ষা করেছেন ঠিক সেভাবেই আপনি আমি পরিক্ষা দিচ্ছি আমাদের আশে পাশে খারাপ\নিষিদ্ধ বিষয়ের মাধ্যমে। আপনি চাইলেই খারাপ কাজ করতে পারেন আপনি ভাবুন আপনার এত কাছে চারিদিকে খারাপ কেন? সেটা ফুটে উঠেছে একটি শব্দ এই বা হাদিহির মাধ্যমে। আপনার চারপাশে হারাম, চুরি, ঘুষ, বেঈমানি, মিথ্যার ও খারাপ কাজের ছড়াছরি তাই আমাদের পরিক্ষা হলো আমরা আমাদের এত কাছে খারাপ বিষয় হতে কি করছি ? আমাদের ইচ্ছা কে আমরা কোন দিকে পরিচালিত করছি। ঠিক আদম (আঃ) এর গাছের মত আমাদের খুব কাছাকাছি রয়েছে শয়তান ও তার প্ররোচনা।

আর এত কাছে খারাপ\বা হারাম থাকলে মানুষের জন্য ধৈর্য্য ধারন করে যে ভালো থাকা অনেক কটিন আল্লাহ তা ভালোকরেই জানেন তাই তিনি কোরআনে ৯০ বার বলেন ধৈর্য্যের কথা আর যারা ধৈর্য্য ধারন করে তারাই সফলকাম সেই কথাও কোরআনে বহু বার বলা আছে।

আর আল্লাহ জানেন মানুষ শয়তানের প্ররোচনায় খুব সহজেই পড়ে খারাপ কাজ করে তাই আল্লাহ কোরআনে অনেক বার বলেছেন ক্ষমার কথা দেখুন সুরা আন নিসা সুরা নং ৪ আয়াত নং ২৫ এবং সুরা মায়েদাহ সুরা নং ৫ আয়াত নং ৭৪ এ। আর তিনি যে সঠিক বিচার করবেন সেটা পাবেন কোরআনের সুরা নং ৪ আয়াত নং ৪০ এ।

এই লিখার মুল অংশ নেয়া হয়েছে এখান হতে : Click This Link

0 comments
Labels: , ,

# কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য:পর্ব ১১ পৃথিবীর স্তর সমুহ ও কোরআন



আমাদের এই পৃথিবী নিয়ে গবেষনার শেষ নেই , উপরে কি আছে আকাশ , বায়ুমন্ডল পানি সে বিষয়ের সাথে সাথে পৃথিবীর ভু অভ্যন্তরে কি আছে সে বিষয়েও চলছে বিস্তর গবেষনা তেল গ্যাস কয়লা, স্বর্ন, হিরা তো আছেই এবার আরো গভিরে যাওয়ার ইচ্ছা বা দুর থেকে দুরের সৈরজগতকে জানার ইচ্ছা মানুষের সবসময় ছিল। তো দেখাযাক কি আছে আমাদের পৃথিবীর মাঝে :

পৃথিবীর ভু-অভ্যন্তরকে সাতটি ভাগে ভাগ করা হয় ১)Lithosphere —লিথোস্পেয়ার ২) Crust----ক্রস্ট ৩)Upper mantle--- আপার ম্যন্টেল
৪) Mantle-- ম্যন্টেল ৫) Asthenosphere--এসথেনোস্পেয়ার
৬) Outer core- আউটার কোর ৭)Inner core--ইনার কোর



পৃথীবির সবচেয়ে নিচের লেয়ার হচ্ছে ইনার কোর যা একটা সলিড বলের মত যার ব্যস ১২২০ কিলোমিটার (৭৬০ মাইল) যা চাদের ৭০% এর সমান ,আর এটার টেম্পারেচার ৫৪৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর ইনার কোর কি দিয়ে পরিপুন জানেন তা হলো লৈহ\লোহা। সুত্র: Paul Preuss May 12, 2003- Click This Link
https://en.wikipedia.org/wiki/Inner_core

এবার একটু চমকানো তথ্য দেই যেহেতু আমরা দেখলাম পৃথিবীর একেবারে ভিতরের মুল উপাদান হচ্ছে লোহা এবার দেখি কোরআনে লোহা সর্ম্পকে কিছু বলা আছে কি?

আমরা জানি কোরআনের মোট সুরা ১১৪ টি তাই না। আচ্ছা তবে কোরআনের মধ্যবর্তী সুরা কোনটা হবে ১১৪/২ = ৫৭ নং সুরা তাই না চলুন দেখি ৫৭ নং সুরা কি বিষয়ে কোরআনে ৫৭ নং সুরা হলো সূরা আল হাদীদ আর হাদীদ অর্থ কি জানেন হ্যা লোহা SURAH 57: AL HADID (Iron) সুবহানাল্লাহ। আর এটাই কোরআনের একমাত্র সুরা যা কোন পদার্থর নামে ।

আরো মজার বিষয় দেখুন সুরা আল হাদীদ সুরা নং ৫৭ আয়াত নং ২৫ শে বলা আছে "আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি নাযিল/প্ররন করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। "

পৃথীবির আকাশে আমরা জানি মোট সাতটি লেয়ার প্রধান পাচটি ও দুটি বর্ডার লেয়ার রয়েছে : 1. Troposphere--ট্রপোস্পেয়ার, 2. Stratosphere--স্টাটোস্পেয়ার, 3. Mesosphere- মেসোস্পেয়ার, 4. Thermosphere--র্থামোস্পেয়ার, 5. Exosphere-- এক্সোসস্পেয়ার, 6. Ionosphere--আয়োনোস্পেয়ার, 7. Magnetosphere- মেগনেটোস্পেয়ার


সুত্র: https://en.wikipedia.org/wiki/Atmosphere_of_Earth ,
 Click This Link , 
http://www.theozonehole.com/atmosphere.htm


এবার দেখি কোরআনের সাথে কিছু মিলে কিনা : ) সূরা আত্ব-ত্বালাক্ব সুরা নং ৬৫ আয়াত নং ১২ : "আল্লাহ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে, এসবের মধ্যে তাঁর আদেশ অবতীর্ণ হয়, যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু তাঁর গোচরীভূত। "

এবং সুারা হা-মীম সেজদাহ সুরা নং৪১ আয়াত নং ১২ "অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। "

সুরা সাবা সুরা নং ৩৪ আয়াত নং ৩: "কাফেররা বলে আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না। বলুন কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত। নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সমস্তই আছে সুস্পষ্ট কিতাবে"

সুরা ত্বোয়া-হা সুরা নং ২০ আয়াত নং: ৪থেকে ৬ "এটা তাঁর কাছ থেকে অবতীর্ণ, যিনি ভূমন্ডল ও সমুচ্চ নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। তিনি পরম দয়াময়, আরশে সমাসীন হয়েছেন। নভোমন্ডলে, ভুমন্ডলে, এতদুভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে এবং সিক্ত ভূগর্ভে যা আছে, তা তাঁরই।"

সুরা আল-ফুরকান সুরা নং ২৫ আয়াত নং ৬: "বলুন, একে তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান।

দেখলেনতো কোরআনের বর্ননা কত নিখুত এখন স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন আসতে পারে কোরআন কি বিজ্ঞানে ভরপুর ?

বিজ্ঞানে ভরপুর না তবে বিজ্ঞানের অনেক বিষয়ে সুক্ষ আলোচনা রয়েছে যেমন ভ্রুন হতে মানুষ পাহাড় আকাশ সুর্য ইত্যাদি নিয়ে, তবে বিজ্ঞানের সাথে কন্টাডিক্টরি কিছু পাবেন না সেটা বলতে পারি।

কোরআন যে সবার জন্য এটার প্রমান হচ্ছে আপনি চাইলে কোরআনে বিজ্ঞান নিয়ে গবেষনা করতে পারেন চাইলে না করতে পারেন তবে কোরআন নাযীল হয়েছিল মানুষের মোরাল বা মনের দিকে পরিবর্তনের জন্য ,আর কোরআন উপদেশ দেয় সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জণ্য সুষম সমাজ ব্যবস্থার জন্য। কোরআন সাইন্টেফিক গবেষনার চেয়ে মানুষের মনের গবেষনায় বেশি মনোযোগি। তবে সাইন্সের মুল বিষয় কোরআনে আলোচনা করা হয়েছে যাতে মানুষ চিন্তা করে এবং নিত্য নতুন আবিস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যায়।

আমাদের সমাজে সর্বকালে শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাই থাকবে তো অশিক্ষিতদের জন্য সাধারন আলোচনা আর শিক্ষিত বা বিজ্ঞদের জন্য বিজ্ঞ আলোচনা, তা না হলে তো আপনারাই বলা শুরু করবেন কোরআন নাকি সর্বকালের সবার জন্য তাইলে এইটাতে একটা সাইন্সের কিছু দেখাও এজন্যই কোরআনে আল্লাহ সকল কিছুই আলোচনা করেছেন যতটুকু দরকার, বাকী মানুষের উপর সে কত গবেষনা আর শিক্ষার মাধ্যেমে এগিয়ে নিতে পারে। মানুষ যতই সাইন্টিফিকলি আগে বাড়ুক তার মন, আর চিন্তা\ আকাক্ষা তো মানুষের প্রবত্তি, হিংসা, ক্ষোভ, ঘৃনা, ভালোবাসা, আশা, নিরাশা হতাশা সেই একই আছে তাই মোরাল বা মেইন থিমটাতে জোর বেশি দেয়া হয়েছে কোরআনে,

কোন বিষয়ে বিস্তারিত গবেষনা, সমসাময়িক বিষয়ে বিস্তারিত সমাধান সেটা যুগের সথে সে সময়কার বিজ্ঞরা নির্ধারন করবেন। কিন্তু মোরাল বা মেইন থিমটা কিন্তু কোরআনেরই থাকবে যেমন পিতা মাতার সাথে ভাল ব্যবহার, স্ত্রী, কন্য নারীর অধিকার, প্রতিবেশির দায়িত্ব, সমাজের প্রতি দায়িত্ব, রাস্ট্রের প্রতি দায়িত্ব , মানুষে মানুষে আচার আচরন এর মানদন্ড, ভুমন্ডল আকাশ পৃথিবী এ সকল বিষয়ই কোরআনে রয়েছে তবে কোরআনরের মুল শিক্ষাই হলো মানুষকে ভালো পথে পরিচালিত করা সরল পথে যে পথে রয়েছে শান্তি যদি সঠিক ভাবে কোরআনের বিধান মানা হয়।

0 comments
Labels: ,

কাজী নজরুল ইসলাম এর ধর্ম বিশ্বাস -by দেশে-বিদেশে

কাজী নজরুল ইসলাম এর ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। নজরুল অসংখ্য হামদ, নাত লিখেছেন; সাথে সাথে হিন্দু ধর্ম নিয়ে অসংখ্য কবিতা, গান লিখেছেন। তাই অনেকে সন্দেহ পোষণ করেন, উনি প্রকৃতই হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস করতেন কিনা? নিজেরা ব্যাখ্যা দেবার আগে সবচেয়ে ভালো হয় নজরুল এ বিষয়ে কী বলেছেন সেটা পর্যালোচনা করা। কেউ কোনো সাহিত্য রচনা করে থাকলে সে বিষয়ে তিনি কি বলেছেন সেই ব্যাখ্যাই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। সেই ব্যাখ্যার দ্বারা যদি প্রমাণিত হয় সেটা ইসলাম-বিরোধী তাহলে অবশ্যই সেটা ইসলাম-বিরোধী।
কালী পূজা
অনেকে অভিযোগ করে থাকেন নজরুল কালি পূজা করেছেন এবং অভিযোগটা আসে মুসলিমদের থেকেই। ‘অতীত দিনের স্মৃতি’ বই এর ৪২ পৃষ্ঠায় লেখক নিতাই ঘটক উল্লেখ করেছেন, “সীতানাথ রোডে থাকাকালীন কবিকে হিন্দুশাস্ত্র বিশেষভাবে চর্চা করতে দেখেছি। অনেকে বলেন কালীমূর্তি নিয়ে কবি মত্ত হয়েছিলেন- একথা ঠিক নয়। আমি কখনো তাঁকে এভাবে দেখিনি।” হিন্দুরাই বলছেন নজরুল পূজা করেননি, যদিও সেটা হয়ে থাকলে হিন্দুদেরই খুশী হবার কথা ছিল বেশী। এখানে একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য; তা হোলো, হিন্দুধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করা আর কালীপূজা করা এক জিনিস নয়।
হিন্দু ধর্ম বিষয়ক লেখা
এখন আমরা দেখব নজরুল হিন্দু ধর্ম বিষয়ক কবিতা, গান কেনো লিখেছিলেন। নজরুল বলেছেন, “আমি হিন্দু-মুসলমানের মিলনে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী। তাই তাদের কুসংস্কারে আঘাত হানার জন্যই মুসলমানী শব্দ ব্যবহার করি, বা হিন্দু দেব-দেবীর নাম নিই। অবশ্য এর জন্য অনেক জায়গায় আমার সৌন্দর্যের হানি হয়েছে। তবু আমি জেনে শুনেই তা করেছি।” [শব্দ-ধানুকী নজরুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন আহমদ, পৃষ্ঠা ২৩৬,২৩৭]
এখানে নজরুল স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন হিন্দু মুসলমানের মিলনের জন্য তিনি এ কাজ করেছেন। তখনকার রাজনৈতিক আবহাওয়া সম্বন্ধে যাদের ধারণা আছে তারা জানেন কি প্রচণ্ড হিন্দু মুসলিম বিরোধ তখন বিরাজমান ছিল।
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ই ডিসেম্বর রবিবার কলিকাতা এলবার্ট হলে বাংলার হিন্দু-মুসলমানের পক্ষ থেকে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বিপুল সমারোহ ও আন্তরিকতা সহকারে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। সেখানে তিনি বলেন, “কেউ বলেন, আমার বাণী যবন, কেউ বলেন, কাফের। আমি বলি ও দুটোর কিছুই নয়। আমি শুধুমাত্র হিন্দু-মুসলমানকে এক জায়গায় ধরে এনে হ্যান্ডশেক করাবার চেষ্টা করেছি, গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছি। [নজরুল রচনাবলী - ৮, পৃষ্ঠা ৩, ৫]

ধর্মবিশ্বাস

কেউ হয়ত বলবেন, হিন্দু মুসলিম এর মিলনের জন্য উনি না হয় এমন লিখেছেন, কিন্তু এতে প্রমাণিত হয়না যে তিনি ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস করতেন। হ্যাঁ কথা ঠিক। এর উত্তর নজরুল দিয়েছেন তাঁর ‘আমার লীগ কংগ্রেস’ প্রবন্ধের ৬১ পৃষ্ঠায় “আমার আল্লাহ নিত্য-পূর্ণ -পরম- অভেদ, নিত্য পরম-প্রেমময়, নিত্য সর্বদ্বন্দ্বাতীত। ‘ইসলাম’ ধর্ম এসেছে পৃথিবীতে পূর্ণ শান্তি সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে – কোরান মজিদে এই মাহাবাণীই উত্থিত হয়েছে। ···এক আল্লাহ ছাড়া আমার কেউ প্রভূ নাই। তাঁর আদেশ পালন করাই আমার একমাত্র মানবধর্ম। আল্লাহ লা-শরিক, একমেবাদ্বিতীয়ম। আল্লাহ আমার প্রভু, রসূলের আমি উম্মত, আল-কোরআন আমার পথ-প্রদর্শক। আমার কবিতা যাঁরা পড়ছেন, তাঁরাই সাক্ষী: আমি মুসলিমকে সঙ্ঘবদ্ধ করার জন্য তাদের জড়ত্ব, আলস্য, কর্মবিমূখতা, ক্লৈব্য, অবিশ্বাস দূর করার জন্য আজীবন চেষ্টা করেছি।”

১৯৪০ সালে কলিকাতায় বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতিরি ঈদ-সম্মেলনে প্রদত্ত সভাপতির অভিভাষণ নজরুল বলেছিলেন, “ইসলাম জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছে।" [নজরুল রচনাবলী - (৭) পৃষ্ঠা ৩৩]

এই লেখার মাধ্যমে নজরুল নিজেকে মুসলমান হিসেবে প্রকাশ করেছেন।

ইসলামের পক্ষে কলম পরিচালনা করা

মৌলভী তরিকুল আলম কাগজে এক প্রবন্ধ লিখে বললেন কোরবানীতে অকারণে পশু হত্যা করা হয়; এমন ভয়াবহ রক্তপাতের কোনো মানে নাই। নজরুল তার জওয়াবে লিখলেন ‘কোরবানী’ কবিতা। তাতে তিনি বললেন-

ওরে, হত্যা নয়, এ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্বোধন,
দুর্বল ভীরু চুপ রহো, ওহো খামখা ক্ষুদ্ধ মন।
…..এই দিনই মীনা ময়দানে
…..পুত্র স্নেহের গর্দানে
……ছুরি হেনে খুন ক্ষরিয়ে নে
রেখেছে আব্বা ইবরাহীম সে আপনা রুদ্র পণ,
ছি,ছি, কেঁপো না ক্ষুদ্র মন।
[নজরুল স্মৃতিচারণ, নজরুল একাডেমী পৃষ্ঠা ৪৩৯ ]

ইসলামের বিপক্ষে আক্রমণ হলে সেটার প্রতিবাদস্বরূপ নজরুল কবিতা লিখেছিলেন। ব্যাপারটা বিস্ময়ের বৈকি। যে কবিকে “কাফের” ফতোয়া দেয়া হয়েছে তিনি-ই কিনা ইসলামের পক্ষে কলম ধরেছেন!!!

মুসলমানের সমালোচনা করে কবিতা লিখা

আরো একটি অভিযোগ করা হয়, সেটা হোলো নজরুল আলেমদের সমালোচনা করেছেন, যেমন:

মৌ-লোভী যত মোলভী আর মোল্লারা কন হাত নেড়ে
দেব-দেবী নাম মুখে আনে সবে তাও পাজীটার যাত মেড়ে।

এখানে মৌলভীদের নজরুল “মৌ লোভী” বলেছেন। যারা এতে অসন্তুষ্ট তাদের এই কবিতাটা হয়ত নজরে পড়েনি:

শিক্ষা দিয়ে দীক্ষা দিয়ে
…. ঢাকেন মোদের সকল আয়েব
পাক কদমে সালাম জানাই
….নবীর নায়েব, মৌলভী সাহেব।

এখানে মৌলভী সাহেবদের নজরুল সালাম জানিয়েছেন। দুটোর মধ্যে আসলে কোনো বিরোধ নেই। বর্তমান সমাজে এটাই বাস্তব। আলেমদের মধ্যেও ভালো-খারাপ দু-ধরণের পরিস্হিতি বিদ্যমান। দুটোই নজরুল ফুটিয়ে তুলেছেন। আর মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি থাকলে সেটা বলার মধ্যে দোষের কিছু নেই। ইব্রাহিম খাঁ-র চিঠির জবাবে নজরুল সেটাই বলেছেন, “যাঁরা মনে করেন-আমি ইসলামের বিরুদ্ধবাদী বা তার সত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছি, তাঁরা অনর্থক এ ভুল করেন। ইসলামের নামে যে সব কুসংস্কার মিথ্যা আবর্জনা স্তুপীকৃত হয়ে উঠেছে তাকে ইসলাম বলে না মানা কি ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযান? এ ভুল যাঁরা করেন, তাঁরা যেন আমার লেখাগুলো মন দিয়ে পড়েন দয়া করে-এ ছাড়া আমার আর কি বলবার থাকতে পারে?” [ইসলাম ও নজরুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, পৃষ্ঠা ৯৫]

আরো একটি অভিযোগ

অনেকে আরো একটি অভিযোগ করেন, নজরুল প্রথম দিকে হিন্দুদের খুশী করার জন্য হিন্দু ধর্ম নিয়ে কবিতা লিখেছেন, পরবর্তীতে মুসলমানদের খুশী করার জন্য ইসলাম বিষয়ক কবিতা লিখেছেন। বিষয়টি তথ্য বিভ্রাট ছাড়া আর কিছু নয়। নজরুলের প্রথম কাব্যগ্রন্হ অগ্নিবীণা-য় ১২টি কবিতার মধ্যে ৭টি কবিতা ইসলাম-বিষয়ক। নজরুল তাঁর সমগ্র জীবনে ছিলেন অকুতোভয়। জীবনে কখনও তিনি কাউকে খুশী করার জন্য বা কাউকে ভয় করার কারণে সত্য গোপন করেননি। সুতরাং হিন্দুদের খুশী করার জন্য নিজের নীতি বিসর্জন দিবেন এটা চিন্তাই করা যায় না। এখানে আমরা একটি পরিসংখ্যান দিয়ে দেখব নজরুল তাঁর সাহিত্য জীবনের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ইসলাম বিষয়ক লেখা লিখেছেন:

** ‘মোসলেম ভারত’-এ প্রকাশিত তাঁর প্রথম কবিতাটি ছিল ‘শাত- ইল আরব’ (মে,১৯২০)
** দ্বিতীয় কবিতা ‘খেয়াপরের তরণী’ (জুলাই ১৯২০)
** ‘কোরবানী’ ১৩২৭-এর ভাদ্রে (আগস্ট, ১৯২০)
** ‘মোহরাম’ ছাপা হয় ১৩২৭-এর আশ্বিনে (সেপ্টেম্বর ১৯২০)
** ১৯২২-এর অক্টোবরে নজরুলের যে ‘অগ্নি-বীণা’ কাব্য প্রকাশিত হয় তার ১২টি কবিতার মধ্যে ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘বিদ্রোহী’, ‘রক্তস্বরধারিণী মা’ আগমনী’, ‘ধূমকেতু’ এই পাঁচটি কবিতা বাদ দিলে দেখা যায় বাকি ৭টি কবিতাই মুসলিম ও ইসলাম সম্পর্কিত। (১৯২২)
** আরবী ছন্দের কবিতা (১৯২৩)
** ১৯২৪-এ প্রকাশিত তাঁর ‘বিষের বাঁশীর প্রথম কবিতা ‘ফাতেহা-ই-দোয়াজ-দহম’ (আবির্ভাব-তিরোভাব) (১৯২৪)
** খালেদ কবিতা (১৯২৬)
** উমর ফারুক কবিতা সওগাতে প্রকাশিত (১৯২৭)
** জিন্জির কাব্যগ্রন্হ প্রকাশ (১৯২৮)
** রুবাইয়াত ই হাফিজ প্রকাশ (১৯৩০)
** কাব্য আমপারা (১৯৩৩)
** জুলফিকার ইসলামিক কাব্যগ্রন্হ প্রকাশ (১৯৩২)
** মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লে আলা ও যাবি কে মদিনায় নাত এ রসুল প্রকাশ (১৯৩৩)
** তওফীক দাও খোদা ইসলামে নাত এর রসুল প্রকাশ (১৯৩৪)
** মক্তব সাহিত্য প্রকাশ (১৯৩৫)
** ফরিদপুর জালা মুসলিম ছাত্র সম্মিলনীতে “বাংলার মুসলিমকে বাঁচাও" অভিভাষণ পাঠ (১৯৩৬)
** ‘সেই রবিউল আউয়ালের চাদ’ নাত এর রসুল প্রকাশ (১৯৩৭)
** ‘ওরে ও মদিনা বলতে পারিস’ নাত এর রসুল প্রকাশ (১৯৩৮)
** দীওয়ান ই হাফিজ এর ৯টি গজল অনুবাদ এবং নির্ঝর কাব্যগ্রন্হে প্রকাশ (১৯৩৯)
** নতুন চাঁদ (১৯৩৯)
** খোদার রহম চাহ যদি নবিজীরে ধর নাত এর রসুল প্রকাশ (১৯৪০)
** মরুভাস্কর ( অসুস্হ হবার পরে প্রকাশিত ১৯৫০)
** রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়াম (১৯৫৮)

সাহিত্যিক জীবনের প্রথম (১৯২০-১৯৪১) থেকে শেষ পর্যন্ত নজরুল অজস্র ধারায় ইসলাম বিষয়ক লেখা লিখে গিয়েছেন উপরের পরিসংখ্যান সেটাই প্রমাণ করে।

কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান

১। নজরুল বাংলা ভাষায় সর্বাধিক “হামদ-নাত” এর রচয়িতা।
২। গ্রামোফোন কোম্পানী থেকে নজরুলের হামদ-নাত যখন বের হোতো, তখন মাঝে মাঝে রেকর্ডের ওপর “পীর-কবি নজরুল” লেখা থাকত।
৩। বাংলা ভাষায় যারা হামদ-নাত রচনা করে গেছেন, তাদের মধ্যে একই সাথে হিন্দু এবং ইসলাম ধর্ম উভয় বিষয়ে পারদর্শী কেউ ছিলনা, একমাত্র ব্যতিক্রম নজরুল।
৪। একাধিক আরবী-ছন্দ নিয়ে নজরুলের অসংখ্য কবিতা আছে, বাংলা ভাষার আরও এক প্রতিভাবান কবি ফররুখ আহমদ এ বিষয়ে কারিশমা দেখাতে পারেনি।
৫। ইরানের কবি হাফিজ আর ওমর খৈয়ামের যতজন ‘কবি’ অনুবাদক আছেন তার মধ্যে নজরুল একমাত্র মূল ফারসী থেকে অনুবাদ করেছেন, বাকী সবাই ইংরেজীর থেকে।
৬। “ফারসী” এবং “আরবী”তে নজরুল এর জ্ঞান ছিল পাণ্ডিত্যের পর্যায়ে।
৭। গ্রামোফোন কম্পানি থেকে “ইসলামি গান” নজরুলের পূর্বে আর কেউ গায়নি।

মুজাফফর আহমদ ও নজরুল

নজরুলের তরুণ জীবনের কমুনিস্ট হয়ে যাওয়া বন্ধু কমরেড মুজাফফর আহমদ তাঁকে কমুনিজমে নিতে ব্যর্থ হন। তাঁর স্বপ্ন সফল হয়নি। ১৯৬৬ খৃস্টাব্দের ২রা আগস্ট কবি আবদুল কাদিরের কাছে লেখা এক চিঠির শেষে তিনি লিখেছেন,

"নজরুল যে আমার সঙ্গে রাজনীতিতে টিকে রইল না; সে যে আধ্যাত্নিক জগতে প্রবেশ করল তার জন্যে অবশ্য আমার মনে খেদ নেই। যদিও আমি বহু দীর্ঘ বৎসর অনুপস্থিত ছিলেম তবুও আমার মনে হয় আমি হেরে গেছি।"

তিনি আরো বলেছেন, "আমি তাকে যত বড় দেখতে চেয়েছিলেম তার চেয়েও সে অনেক, অনেক বড় হয়েছে।"
(নজরুল একাডেমী পত্রিকাঃ ৪র্থ বর্ষঃ ১ম সংখ্যাঃ পৃষ্ঠাঃ ১৬৪)

নজরুল জীবনের শেষ অধ্যায়
নজরুলের জীবনের একমাত্র সাক্ষাৎকার যেটা উনি ১৯৪০ সনে দিয়েছিলেন, চিরদিনের জন্য অসুস্হ হয়ে যাবার কিছুদিন আগে- সেখানে উনি বলেছিলেন,
"মুসলমানরা যে একদিন দুনিয়াজোড়া বাদশাহি করতে সমর্থ হয়েছিল সে তাদের ইমানের বলে। আজ আমরা ইমান হারিয়ে ফেলেছি। ইমানের প্রকৃত অর্থ ‘পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পন’। ভারতে রাজা-বাদশাদের দ্বারা ইসলাম জারি হয় নাই। আর মানুষের মঙ্গলের বিধান করেছেন আউলিয়া ‘পীর’ বোজর্গান। সারা ভারতে হাজার আউলিয়ার মাজার কেন্দ্র করে আজো সেই শান্তির কথা আমরা শুনতে পাই। আমি মওলানা আকরম খাঁ ও মৌলবি ফজলুর হক সাহেবকে বলেছিলাম যে, আসুন, আপনারা সমস্ত ত্যাগ করে হজরত ওমর (রাঃ) ও আবুবকরের (রাঃ) আদর্শ সামনে রেখে সমাজে লাগি, আমি আমার সব কিছু ছেড়ে কওমের খেদমতে লাগতে রাজি আছি।” [অতীত দিনের স্মৃতি, সম্পাদনা - আব্দুল মান্নান সৈয়দ পৃষ্ঠা ১৯২,১৯৩]

কিছু উল্লেখযোগ্য স্মৃতিচারণ

দুটি ঘটনা দিয়ে আজকের লেখা শেষ করছি।

প্রথম ঘটনা:
নজরুল স্মৃতিচারণ বই-এ ৩১৭ পৃষ্ঠায় লেখক খান মুহম্মদ সালেক বলেন, “১৯৩৯ সালের ৫ আগষ্ট। কোলকাতা বেকার হোষ্টেলে নবীনবরণ অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি করে আনা হয়েছে তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী নলিনীরঞ্জন সরকারকে। বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন নজরুল ইসলাম আর আব্বাস উদ্দীন। অনুষ্ঠান শেষে কবিকে চা-পানের জন্য নিয়ে যাওয়া হলো হোস্টেলের কমনরুমে। কিছু ছাত্র আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়েছিল। তারা এক টুকরো করে কাগজ কবির সামনে ধরছে আর আবদার জানাচ্ছে কিছু লিখে দেবার জন্য। কবি একটা পেন্সিল হাতে নিলেন। তারপর একজনকে লিখে দিলেন, ‘আল্লাহু আকবর।' আর একজনকে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসলুল্লাহ।’ আবার কাউকে লিখলেন, ‘খোদাকে চেনো, খোদাকে চিনবে।’ আমিও এক টুকরো কাগজ বের করে সামনে ধরলাম। তিনি লিখলেন, ‘যারা ধৈর্যশীল খোদা তাদের সহায়।’ তাঁর এ ধরণের উক্তি থেকে মনে হয়েছিল তিনি কোন পীর-দরবেশ বা অলি আউলিয়ার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করছেন।"

দ্বিতীয় ঘটনা:
শিল্পী আব্বাসউদ্দিন একদিন অনেক খোঁজাখুঁজি করে নজরুলকে না পেয়ে সকালে তার বাসায় গেলেন। বাসায় গিয়ে দেখলেন নজরুল গভীর মনোযোগ দিয়ে কি যেন লিখছেন। নজরুল ইশারায় আব্বাসউদ্দিনকে বসতে বললেন। আব্বাস উদ্দিন অনকেক্ষণ বসে থাকার পর জোহরের নামাজের সময় হলে তিনি উসখুস করতে লাগলেন। নজরুল বললেন, “কি তাড়া আছে, যেতে হবে?” আব্বাসউদ্দিন বললেন, “ঠিক তাড়া নেই, তবে আমার জোহরের নামাজ পড়তে হবে। আর এসেছি একটা ইসলামি গজল নেবার জন্য। গজল না নিয়ে আজ যাওয়া হচ্ছে না।” [নজরুলকে যেহেতু বাউন্ডেলে স্বভাবের কারণে পাওয়া যেত না, তাই সবাই এইভাবে লেখা আদায় করত] নামাজ পড়ার কথা শুনে নজরুল তাড়াতাড়ি একটি পরিস্কার চাদর তার ঘরের আলমারি থেকে বের করে বিছিয়ে দিলেন। এরপর আব্বাস উদ্দিন যথারীতি জোহেরর নামাজ শেষ করার সাথে সাথে নজরুল আব্বাসউদ্দিনের হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “এই নাও তোমার গজল।” আব্বাস উদ্দিন বিস্ময়ের সাথে দেখলেন তার নামাজ পড়তে যে সময় লেগেছে ঠিক সেই সময়ের মধ্যে নজরুল সম্পূর্ণ একটি নতুন গজল লিখে ফেলেছেন। নীচে গজলটি দেয়া হলো:

হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ
দিলাম তোমার চরণ তলে হৃদয় জায়নামাজ।
আমি গোনাহগার বে-খবর
নামাজ পড়ার নাই অবসর
তব, চরণ-ছোওয়ার এই পাপীরে কর সরফরাজ
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ।
তোমার অজুর পানি মোছ আমার পিরহান দিয়ে
আমার এই ঘর হউক মসজিদ তোমার পরশ নিয়ে;
যে শয়তান ফন্দিতে ভাই
খোদার ডাকার সময় না পাই
সেই শয়তান থাক দূরে (শুনে) তকবীরের আওয়াজ
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ।

আমার লেখার উদ্দেশ্য এই নয় যে, নজরুল আদর্শ মুসলমান ছিলেন কিংবা তিনি অনুসরণীয়- এটা প্রচার করা। বরং আমার লেখার উদ্দেশ্য হোলো, নজরুল বিশ্বাসে সম্পূর্ণরূপে মুসলিম ছিলেন যেটা অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না। আশাকরি উপরের আলোচনা আমাদের নতুন করে সেটাই ভাবতে শেখাবে। এরপরও অনেকে থাকবে যারা বিদ্বেষ ছড়াবে, তাদের সম্বন্ধে নজরুল বলেছেন:

উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ
আমরা বলিব, “সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ।”
==============================================
পরিশিষ্ট: নজরুলের কিছু ইসলাম বিষয়ক কবিতা

বিষয়: ইসলাম
আল্লাহ আমার প্রভু, আমার নাহি নাহি ভয়
আমার নবী মোহাম্মদ, যাহার তারিফ জগৎময়।
আমার কিসের শঙ্কা,
কোরআন আমার ডঙ্কা,
ইসলাম আমার ধর্ম, মুসলিম আমার পরিচয়।
কলেমা আমার তাবিজ, তৌহীদ আমার মুর্শিদ
ঈমান আমার বর্ম, হেলাল আমার খুর্শিদ।
‘আল্লাহ আক্‌বর’ ধ্বনি
আমার জেহাদ বাণী
আখের মোকাম ফেরদৌস্‌ খোদার আরশ যেথায় রয়
আল্লাহ আমার প্রভু, আমার নাহি নাহি ভয়।

বিষয়: রিজিক
আহার দিবেন তিনি, রে মন
জীব দিয়েছেন যিনি
তোরে সৃষ্টি করে তোর কাছে যে
আছেন তিনি ঋণী।

বিষয়: রেসালত
চলে আন্‌জাম
দোলে তান্‌জাম
খোলে হুর পরী মরি ফিরদৌসের হাম্মাম!
টলে কাঁখের কলসে কওসর ভর, হাতে ‘আব্‌-জম-জম্‌-জাম্‌’।
শোন্‌ দামাম কামান্‌ তামাম্‌ সামান্‌
নির্ঘোষি কার নাম
পড়ে ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহে সাল্‌লাম!’
বারেক মুখে নিলে যাঁহার নাম
চিরতরে হয় দোজখ্‌ হারাম,
পাপীর তরে দস্তে যাহার, কওসরের পিয়ালা
হের আজ আরশে এলেন মোদের নবী কম্‌লীওয়ালা।

বিষয়: কালেমা শাহাদত
এসমে আজম হ’তে কদর ইহার,
পায় ঘরে ব’সে খোদা আর রসুলের দীদার
তাহার হ্রদয়াকাশে
সাত বেহেশ্‌ত ভাসে
খোদার আরশে হয় আখেরে গতি
কলেমা শাহাদাতে আছে খোদার জ্যোতি
ঝিনুকের বুকে লুকিয়ে থাকে যেমন মোতি।

বিষয়: কোরবানী
আল্লার নামে, ধর্মেরও নামে, মানব জাতির লাগি
পুত্রেরে কোরবানী দিতে পারে, আছে কেউ হেন ত্যাগী?
সেই মুসলিম থাকে যদি কেউ, তসলিম কবি তারে,
ঈদগাহে গিয়া তারি সার্থক হয় ডাকা আল্লারে।
অন্তরে ভোগী বাইরে যে যোগী, মুসলমান সে নয়,
চোগা চাপাকানে ঢাকা পড়িবে না সত্য সে পরিচয়!

বিষয়: জাকাত
দে জাকাত, দে জাকাত, তোরা দে রে জাকাত
দিল্‌ খুলবে পরে – ওরে আগে খুলুক হাত।

বিষয়: আরাফাত ময়দান
দুখের সাহারা পার হ’য়ে আমি
চলেছি কাবার পানে
পড়িব নামাজ মারেফাতের
আরাফাত ময়দানে।

বিষয়: বেহেশত
সেথা হর্দম খুশির মৌজ,
তীর হানে কালো আখির ফৌজ,
পায়ে পায়ে সেথা আর্জি পেশ,
দিল চাহে সদা দিল্‌-আফরোজ,
পিরানে পরান বাধা সেথায়
আয়, বেহেশতে কে যাবি, আয়।

বিষয়: জাগরণমূলক কবিতা
মোরা আসহাব কাহাফের মত
হাজারো বছর শুধু ঘুমাই,
আমাদের কেহ ছিল বাদশাহ
কোনো কালে তারি করি বড়াই,
জাগি যদি মোরা, দুনিয়া আবার
কাঁপিবে চরণে টালমাটাল
দিকে দিকে পুন জ্বলিয়া উঠেছে
দ্বীন ই ইসলামি লাল মশাল।


http://www.shodalap.org/deshebideshe/13308

0 comments
Labels: ,

বিদ্রোহী -কবি কাজি নজরুল ইসলাম

বিদ্রোহী

বল বীর -
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি আমারি, নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!
বল বীর -
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি'
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি'
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া,
খোদার আসন "আরশ" ছেদিয়া
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর!
মম ললাটে রুদ্র-ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর -
আমি চির-উন্নত শির!

আমি চিরদুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস,
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর!
আমি দুর্ব্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ'লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃংখল!
আমি মানি নাকো কোনো আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম,
ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জ্জটী, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর!
আমি বিদ্রোহী আমি বিদ্রোহী-সূত বিশ্ব-বিধাত্রীর!
বল বীর -
চির উন্নত মম শির!

আমি ঝঞ্ঝা, আমি ঘূর্ণী,
আমি পথ-সম্মুখে যাহা পাই যাই চূর্ণী!
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
আমি হাম্বীর, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল,
আমি চল-চঞ্চল, ঠুমকি' ছমকি'
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি'
ফিং দিয়া দিই তিন দোল্!
আমি চপলা-চপল হিন্দোল!

আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা',
করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা,
আমি উদ্দাম, আমি ঝঞ্ঝা!
আমি মহামারী, আমি ভীতি এ ধরিত্রীর।
আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ণ চির-অধীর।
বল বীর -
আমি চির-উন্নত শির!

আমি চির-দুরন্ত-দুর্ম্মদ,
আমি দুর্দ্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দ্দম্ হ্যায়্ হর্দ্দম্
ভরপুর মদ।
আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক, জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি!
আমি সৃষ্টি, আমি ধ্বংস, আমি লোকালয়, আমি শ্মশান,
আমি অবসান, নিশাবসান।
আমি ইন্দ্রাণি-সূত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য্য,
মম এক হাতে-বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণ-তূর্য্য।
আমি কৃষ্ণ-কন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা বারিধির।
আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।
বল বীর -
চির উন্নত মম শির।

আমি সন্ন্যাসী, সুর-সৈনিক
আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক!
আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস,
আমি আপনা ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!
আমি বজ্র, আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার,
আমি ইস্ত্রাফিলের শিঙ্গার মহা-হুঙ্কার,
আমি পিনাক-পাণির ডমরু-ত্রিশূল, ধর্ম্মরাজের দন্ড,
আমি চক্র ও মহাশঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ-প্রচন্ড!
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা-বিশ্বামিত্র-শিষ্য,
আমি দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব!
আমি প্রাণ-খোলা-হাসি উল্লাস, - আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস,
আমি মহা-প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু-গ্রাস!
আমি কভু প্রশান্ত, - কভু অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্প-হারী!
আমি প্রভঞ্জনের উচ্ছাস, আমি বারিধির মহাকল্লোল,
আমি উজ্জ্বল আমি প্রোজ্জ্বল,
আমি উচ্ছল জল-ছল-ছল, চল-ঊর্মির হিন্দোল্ দোল!

আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণী, তন্বী-নয়নে বহ্নি,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম-উদ্দাম, আমি ধন্যি।
আমি উন্মন মন উদাসীর,
আমি বিধাতার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা-হুতাশ আমি হুতাশীর!
আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির-গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম-বেদনা, বিষ-জ্বালা, প্রিয়-লাঞ্ছিত
বুকে গতি ফের!
আমি অভিমানী চির-ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,
চিত- চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম পরশ কুমারীর!
আমি গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল ক'রে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা, তা'র কাঁকন-চুড়ির কন্-কন্।
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর,
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচর কাঁচলি নিচোর!
আমি উত্তর-বায়ু, মলয়-অনিল, উদাসী পূরবী হাওয়া,
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীনে গান গাওয়া!
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র রবি,
আমি মরু-নির্ঝর ঝর-ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি! -
আমি তুরিয়ানন্দে ছুটে চলি এ কি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে
সব বাঁধ!

আমি উত্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব বিজয় কেতন!
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ-মর্ত্ত্য করতলে,
তাজি বোরবাক্ আর উচ্চৈস্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেস্বা হেঁকে চলে!
আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নেয়াদ্রি, বাড়ব-বহ্নি, কালানল,
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথর-কলরোল-কল-কোলাহল!
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া, দিয়া লম্ফ,
আণি ত্রাস সঞ্চারি ভুবনে সহসা, সঞ্চরি' ভূমি-কম্প!
ধরি বাসুকির ফনা জাপটি', -
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা সাপটি'!
আমি দেব-শিশু, আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব-মায়ের অঞ্চল!

আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুম্-ঘুম্
ঘুম্ চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝ্ঝুম্
মম বাঁশরী তানে পাশরি'
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠে' যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
ভয়ে সপ্ত নরক হারিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!

আমি প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরণীরে করি বরণিয়া, কভু বিপুল ধ্বংস-ধন্যা -
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
আমি অন্যায়, আমি উল্কা, আমি শনি,
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কাল-ফণি!
আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী, আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!

আমি মৃণ্ময়, আমি চিন্ময়,
আমি অজর অমর অক্ষয়, আমি অব্যয়!
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির দুর্জ্জয়,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মথিয়া ফিরি এ স্বর্গ-পাতাল-মর্ত্ত্য
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!!
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে
সব বাঁধ!!
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার,
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
আমি হল বলরাম স্কন্ধে,
আমি উপাড়ি' ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।

মহা- বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল, আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না -
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি আমি সেই দিন হব শান্ত!
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ-হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব-ভিন্ন!
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
আমি খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!

আমি চির-বিদ্রোহী বীর -
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!

0 comments
Labels: , ,

# কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য:পর্ব ১০ -- যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।

আজ আমরা কোরআনে একটি বিশেষ দোয়া শিখবো যা হজরত ইবরাহিম (আঃ) বলেছিলেন।

وَإِذَا مَرِضْتُفَهُوَ يَشْفِينِ

....যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন। --[সূরা আশ-শো’আরা ( মক্কায় অবতীর্ণ ),সুরা নং ২৬) আয়াত ৮০]

এখানে مَرِضْتُ বলতে বলা হয়েছে যখন আমি রোগাক্রান্ত হই। এখানে একটি খুবই সূক্ষ একটি পয়েন্ট রয়েছে ; আল্লাহর নবী/রাসুলেরা আল্লাহর প্রতি কেমন শ্রদ্ধা ও সম্মান পোষন করেন তা বোঝা যায়। এখানে ইবরাহীম (আঃ) বলেননি "যখন আল্লাহ আমাকে রোগাক্রান্ত করেন" বা আল্লাহ রোগ দেন বরং তিনি বলেছেন "যখন আমি রোকাক্রান্ত হই" এর মাধ্যমে তিনি তার রোগের জন্য আল্লাহকে দোষারোপ করছেন না বা এর দায় আল্লাহর উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন না। যদিও তিনি ভাল করে জানেন সুস্থাস্থ্য এবং রোগ সবই আল্লাহর পক্ষ হতে কিন্তু আমরা(ঈমানদাররা) আমাদের রোগ কে দেখি আল্লাহর পক্ষ হতে টেস্ট\পরিক্ষা হিসেবে তবুও ইবরাহিম (আঃ) এর আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান থাকার কারনে তিনি বলেননি রোগাক্রন্ত বা দুস্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া আল্লাহর দোষ বা আল্লাহ ওনাকে রোগাক্রান্ত করেছেন বরং তিনি স্বীকার করছেন রোগাক্রন্ত হন বা হয়েছেন নিজের কারনে।

আমরা যদি একটু গভীর ভাবে ভাবি তবে দেখবো যদিও রোগ, দুশ্চিন্তা , মন খারাপ , সুস্বাস্থ্য বা ভাল অবস্থা, খুশি আল্লাহর পক্ষ হতে তবুও মানুষ কিছুটা এর জন্য দায়ি যেমন ধরুন শীতকাল আসলেই আমাদের ঠান্ডা, সর্দি, বা কাসি বা জ্বরের বা অন্য কোন ফ্লুর প্রভাব বাড়ে এখন যারা সতর্ক হয়ে চলে তাদের সেই ফ্লুতে আক্রান্ত বা ঠান্ডা লাগার সম্ভবনা কম, বা হাত না ধুলে জীবানু আমাদের পেট খারাপ করে দেয় বা এইডস যা রক্ত বা শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে ছরায়।

জীবানু গুলো তো আল্লাহর তৈরি কিন্তু সেটা মানুষের ক্ষতির জন্য দায়ী মানুষও তাই না ? কারন সে সেটা হতে চাইলে বেচে চলতে পারতো আবার অনেকে বেচে চললেও সে রক্ষা পায় না সো কিছু মানুষদের হাতে কিন্তু পরম ক্ষমতা আল্লাহর হাতে। আর এই বিষয়টা বুঝতে বা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন নবী ইবরাহিম (আঃ) তাই তিনি স্বীকার করছেন রোগাক্রন্ত হন বা হয়েছেন নিজের কারনে। আবার মানুষের মনের রোগ বা আমরা বিভিন্ন বিষয়ে যে দুস্চিন্তা করি সেটাও মানুষের নিজের কারনে হয় আবার অনেক চিন্তা আসে মনের অজান্তে শয়তানের প্ররোচনার কারনে এবং কিছু মানষিক রোগ হয় মানুষের নিজের দুর্দশা বা বিপদের কারনে।

এবার আয়াতের দ্বিতীয় অংশ দেখি فَهُوَ يَشْفِينِ এর পর তিনি বললেন তখন তিনিই(আল্লাহ) আরোগ্য দান করেন এখানে আল্লাহকে ভাল কিছুর বা ভাল গুনের জন্য তিনি শুধু আল্লাহকেই মর্যাদা ও সকল ভাল কিছুর মালিক বলে স্বীকার করছেন। يَشْفِينِ এই শব্দটা দিয়ে বোঝাচ্ছে যে এই রোগাক্রান্ত একবারের বেশি হতে পারেন। তাই ইবরাহিম (আঃ) বলেন যখন আমি রোগাক্রান্ত হব মানে তিনি একবারের বেশি হতে পারেন বা ভবিষ্যতে হলে তিনি স্বীকার করছেন আল্লাহ ওনাকে প্রতিবার শিফা বা রোগমুক্তি দিবেন।

হজরত ইবরাহীম (আঃ) এমন ভাবে বলতে পেরেছেন কারন ওনার আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা ও অগাধ বিশ্বাসের কারনে, ওনার হৃদয়ের ধার্মিকতা ও গুনের কারনে যা ওনার চরিত্রে এবং কর্মে প্রকাশ পায় এজন্যই আল্লাহ ওনাকে নিজের খলিল বা কাছের বন্ধু রুপে গ্রহন করেন তাই ওনাকে বলা হয় ইবরাহীম খালিলুল্লাহ। আর নবী ইবরাহীম (আঃ) এর এই সকল গুলাবনী কোরআনে প্রকাশ করেছে মাত্র পাচটি শব্দ দ্বারা!

আর এখানেই কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য কারন দেখুন সেই আয়াতের আগের ও পরের আয়াত সমুহ সকল কিছুতে আল্লাহর কথা যেমন তিনি সৃস্টি করেছেন , তিনি পথ প্রর্দশক, যিনি আহার ও পানি দান করেন এর পর চাইলে বলতে পারতেন তিনি রোগ দেন এবং তিনি রোগমুক্তু করেন কিন্তু সেটা না বলে রোগের কারন মানুষকেও উল্লেখ করা হয়েছে এরপর বলা হয় তিনি মৃত্যু ও পুর্ন জীবন দান করেন।

সূরা আশ-শো’আরা ( মক্কায় অবতীর্ণ ),সুরা নং ২৬) আয়াত ৭৮-৮১
৭৮:-যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন, ৭৯:-যিনি আমাকে আহার এবং পানীয় দান করেন, ৮০:-যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন। ৮১:- যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।

দেখলেন তো কোরআন কত সুক্ষ বিষয়েও নির্ভুল ভাবে বর্ননা করা হয়েছে কারন একটাই এটা মহান আল্লাহর প্রেরিত বানী।

এবার রোগাক্রান্ত বিষয়ে কোরআনের আয়াত আশ শিফা বা রোগমুক্তির আয়াত :

১।হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য। ---[ সূরা ইউনুস সুরা নং ১০ আয়াত নং ৫৭]

২। সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। মৈমাছির পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।--[ সুরা নাহল সুরা নং ১৬ আয়াত নং ৬৯]

৩।আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়। [-- সুরা বনী ইসলাঈল/ আন নজম সুরা নং ১৭ আয়াত নং ৮]

৪।আমি যদি একে অনারব ভাষায় কোরআন করতাম, তবে অবশ্যই তারা বলত, এর আয়াতসমূহ পরিস্কার ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, কিতাব অনারব ভাষায় আর রসূল আরবী ভাষী! বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয়। [সুরা হা-মীম সেজদাহ/আল -ফুসিলাত আয়াত নং ৪৪]

৫।যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন। --[সূরা আশ-শো’আরা ( মক্কায় অবতীর্ণ ),সুরা নং ২৬) আয়াত ৮০]

এই পোস্টের মুল বিষয় নেয়া হয়েছে এখান হতে:: http://www.linguisticmiracle.com/gems/ill

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): কোরআনকোরআনের ভাষাকোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্যমনের রোগ মুক্তিইসলামে রোগ মুক্তিরোগ মুক্তির দোয়া,

0 comments
Labels: , ,

# কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য:পর্ব ৯ কোরআনে দিন ৩৬৫ , মাস ১২ ও দিন সমুহ ৩০ বার উল্লেখ



কোরআনের যে ইন্টারেস্টিং ভাষাগত সৈন্দর্য বিষয়ে আজ দেখবো তা হচ্ছে দিন-মাস ও বছর(দিন সমুহের সমস্টি) কত বার করে উল্লেখ করা হয়েছে:

আপনারা কি জানেন কোরআনে মোট আয়াত ৬২৩৬ মোট শব্দ ৭৭,৭৯৭, এবং যদি রিপিট শব্দ গুলো ধরেন তবে মোট শব্দ দাড়ায় ১৩,৪৮৩ আর মোট অক্ষর সংখ্যা হচ্ছে ৩২১,১৭৪ এটা একটা কম্পিউটার প্রোগ্রামে গননা করে পাওয়া এখন আমরা দেখবো এর মাঝে কোরআনে কতবার দিন, মাস ও দিন সমুহের কথা বলা আছে:

এবার চলুন আগে সংখা গুলো দেখা যাক কি কোথায় উল্লেখ করা হয়েছে: কোরআনে দিন কে ইয়াওম “Day (yawm)” দিনের বহু বচন বা দিনের সমস্টি দিন সমুহ কে আয়-য়াম এবং ইয়াওমায়ুন“days (ayyam and yawmayn)” এবং মাস কে সাহার (shahar) বলা হয়েছে আর জানেন কত বার উল্লেখ আছে দিন ৩৬৫ বার -মাস ১২ বার এবং দিন সমুহ আর দিনের বহু বচন ৩০ বার উল্লেখ আছে সুবহানাল্লাহ এবার দেখবো কোন আয়াতে কি উল্লেখ আছে:

দিনের বহু বচন বা দিনের সমস্টি দিন সমুহ কে আয়-য়াম এবং ইয়াওমায়ুন“days (ayyam and yawmayn)” কোন আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তার লিস্ট:

ক্রমিক নং--->সুরা নং: আয়াত নং
1 ———> 2:80
2 ———> 2:184
3 ———> 2:184
4 ———> 2:185
5 ———> 2:196
6 ———> 2:203
7 ———> 2:203
8 ———> 3:24
9 ———> 3:41
10 ———> 3:140
11 ———> 5:89
12 ———> 7:54
13 ———> 10:3
14 ———> 10:102
15 ———> 11:7
16 ———> 11:65
17 ———> 14:5
18 ———> 22:28
19 ———> 25:59
20 ———> 32:4
21 ———> 34:18
22 ———> 41:9
23 ———> 41:10
24 ———> 41:12
25 ———> 41:16
26 ———> 45:14
27 ———> 50:38
28 ———> 57:4
29 ———> 69:7
30 ———> 69:24

মাস বা সাহার কোন আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তার লিস্ট
ক্রমিক নং--->সুরা নং: আয়াত নং
1 ———> 2:185
2 ———> 2:185
3 ———> 2:194
4 ———> 2:194
5 ———> 2:217
6 ———> 5:2
7 ———> 5:97
8 ———> 9:36
9 ———> 34:12
10 ———> 34:12
11 ———> 46:15
12 ———> 97:3


দিন \ ইয়াওম\Day (yawm) কোন আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তার লিস্ট
ক্রমিক নং--->সুরা নং: আয়াত নং
1 ———> 1 :4
2 ———> 2:8
3 ———> 2:48
4 ———> 2:62
5 ———> 2:85
6 ———> 2:113
7 ———> 2:123
8 ———> 2:126
9 ———> 2:174
10 ———> 2:177
11 ———> 2:212
12 ———> 2:228
13 ———> 2:232
14 ———> 2:249
15 ———> 2:254
16 ———> 2:259
17 ———> 2:259
18 ———> 2:264
19 ———> 2:281
20 ———> 3:9
21 ———> 3:25
22 ———> 3:30
23 ———> 3:55
24 ———> 3:77
25 ———> 3:106
26 ———> 3:114
27 ———> 3:155
28 ———> 3:161
29 ———> 3:166
30 ———> 3:180
31 ———> 3:185
32 ———> 3:194
33 ———> 4:38
34 ———> 4:39
35 ———> 4:59
36 ———> 4:87
37 ———> 4:109
38 ———> 4:136
39 ———> 4:141
40 ———> 4:159
41 ———> 4:162
42 ———> 5:3
43 ———> 5:3
44 ———> 5:5
45 ———> 5:14
46 ———> 5:36
47 ———> 5:64
48 ———> 5:69
49 ———> 5:109
50 ———> 5:119
51 ———> 6:12
52 ———> 6:15
53 ———> 6:22
54 ———> 6:73
55 ———> 6:73
56 ———> 6:93
57 ———> 6:128
58 ———> 6:141
59 ———> 6:158
60 ———> 7:14
61 ———> 7:32
62 ———> 7:51
63 ———> 7:53
64 ———> 7:59
65 ———> 7:163
66 ———> 7:163
67 ———> 7:167
68 ———> 7:172
69 ———> 8:41
70 ———> 8:41
71 ———> 8:48
72 ———> 9:3
73 ———> 9:18
74 ———> 9:19
75 ———> 9:25
76 ———> 9:29
77 ———> 9:35
78 ———> 9:36
79 ———> 9:44
80 ———> 9:45
81 ———> 9:77
82 ———> 9:99
83 ———> 9:108
84 ———> 10:15
85 ———> 10:28
86 ———> 10:45
87 ———> 10:60
88 ———> 10:92
89 ———> 10:93
90 ———> 11:3
91 ———> 11:8
92 ———> 11:26
93 ———> 11:43
94 ———> 11:60
95 ———> 11:77
96 ———> 11:84
97 ———> 11:98
98 ———> 11:99
99 ———> 11:103
100 ———> 11:103
101 ———> 11:105
102 ———> 12:54
103 ———> 12:92
104 ———> 14:18
105 ———> 14:31
106 ———> 14:41
107 ———> 14:42
108 ———> 14:44
109 ———> 14:48
110 ———> 15:35
111 ———> 15:36
112 ———> 15:38
113 ———> 16:25
114 ———> 16:27
115 ———> 16:27
116 ———> 16:63
117 ———> 16:80
118 ———> 16:80
119 ———> 16:84
120 ———> 16:89
121 ———> 16:92
122 ———> 16:111
123 ———> 16:124
124 ———> 17:13
125 ———> 17:14
126 ———> 17:52
127 ———> 17:58
128 ———> 17:62
129 ———> 17:71
130 ———> 17:97
131 ———> 18:19
132 ———> 18:19
133 ———> 18:47
134 ———> 18:52
135 ———> 18:105
136 ———> 19:15
137 ———> 19:15
138 ———> 19:15
139 ———> 19:26
140 ———> 19:33
141 ———> 19:33
142 ———> 19:33
143 ———> 19:37
144 ———> 19:38
145 ———> 19:38
146 ———> 19:39
147 ———> 19:85
148 ———> 19:95
149 ———> 20:59
150 ———> 20:64
151 ———> 20:100
152 ———> 20:101
153 ———> 20:102
154 ———> 20:104
155 ———> 20:124
156 ———> 20:126
157 ———> 21:47
158 ———> 21:104
159 ———> 22:2
160 ———> 22:9
161 ———> 22:17
162 ———> 22:47
163 ———> 22:55
164 ———> 22:69
165 ———> 23:16
166 ———> 23:65
167 ———> 23:100
168 ———> 23:111
169 ———> 23:113
170 ———> 23:113
171 ———> 24:2
172 ———> 24:24
173 ———> 24:37
174 ———> 24:64
175 ———> 25:14
176 ———> 25:17
177 ———> 25:22
178 ———> 25:25
179 ———> 25:26
180 ———> 25:27
181 ———> 25:69
182 ———> 26:38
183 ———> 26:82
184 ———> 26:87
185 ———> 26:88
186 ———> 26:135
187 ———> 26:155
188 ———> 26:156
189 ———> 26:189
190 ———> 26:189
191 ———> 27:83
192 ———> 27:87
193 ———> 28:41
194 ———> 28:42
195 ———> 28:61
196 ———> 28:62
197 ———> 28:65
198 ———> 28:71
199 ———> 28:72
200 ———> 28:74
201 ———> 29:13
202 ———> 29:25
203 ———> 29:36
204 ———> 29:55
205 ———> 30:12
206 ———> 30:14
207 ———> 30:43
208 ———> 30:55
209 ———> 30:56
210 ———> 30:56
211 ———> 31:33
212 ———> 32:5
213 ———> 32:25
214 ———> 32:29
215 ———> 33:21
216 ———> 33:44
217 ———> 33:66
218 ———> 34:30
219 ———> 34:40
220 ———> 34:42
221 ———> 35:14
222 ———> 36:54
223 ———> 36:55
224 ———> 36:59
225 ———> 36:64
226 ———> 36:65
227 ———> 37:20
228 ———> 37:21
229 ———> 37:26
230 ———> 37:144
231 ———> 38:16
232 ———> 38:26
233 ———> 38:53
234 ———> 38:78
235 ———> 38:79
236 ———> 38:81
237 ———> 39:13
238 ———> 39:15
239 ———> 39:24
240 ———> 39:31
241 ———> 39:47
242 ———> 39:60
243 ———> 39:67
244 ———> 40:15
245 ———> 40:16
246 ———> 40:16
247 ———> 40:17
248 ———> 40:17
249 ———> 40:18
250 ———> 40:27
251 ———> 40:29
252 ———> 40:30
253 ———> 40:32
254 ———> 40:33
255 ———> 40:46
256 ———> 40:49
257 ———> 40:51
258 ———> 40:52
259 ———> 41:19
260 ———> 41:40
261 ———> 41:47
262 ———> 42:7
263 ———> 42:45
264 ———> 42:47
265 ———> 43:39
266 ———> 43:65
267 ———> 43:68
268 ———> 44:10
269 ———> 44:16
270 ———> 44:40
271 ———> 44:41
272 ———> 45:17
273 ———> 45:26
274 ———> 45:27
275 ———> 45:28
276 ———> 45:34
277 ———> 45:35
278 ———> 46:5
279 ———> 46:20
280 ———> 46:20
281 ———> 46:21
282 ———> 46:34
283 ———> 46:35
284 ———> 50:20
285 ———> 50:22
286 ———> 50:30
287 ———> 50:34
288 ———> 50:41
289 ———> 50:42
290 ———> 50:42
291 ———> 50:44
292 ———> 51:12
293 ———> 51:13
294 ———> 52:9
295 ———> 52:13
296 ———> 52:46
297 ———> 54:6
298 ———> 54:8
299 ———> 54:19
300 ———> 54:48
301 ———> 55:29
302 ———> 56:50
303 ———> 56:56
304 ———> 57:12
305 ———> 57:12
306 ———> 57:13
307 ———> 57:15
308 ———> 58:6
309 ———> 58:7
310 ———> 58:18
311 ———> 58:22
312 ———> 60:3
313 ———> 60:6
314 ———> 62:9
315 ———> 64:9
316 ———> 64:9
317 ———> 64:9
318 ———> 65:2
319 ———> 66:7
320 ———> 66:8
321 ———> 68:24
322 ———> 68:39
323 ———> 68:42
324 ———> 69:35
325 ———> 70:4
326 ———> 70:8
327 ———> 70:26
328 ———> 70:43
329 ———> 70:44
330 ———> 73:14
331 ———> 73:17
332 ———> 74:9
333 ———> 74:46
334 ———> 75:1
335 ———> 75:6
336 ———> 76:7
337 ———> 76:10
338 ———> 76:11
339 ———> 76:27
340 ———> 77:12
341 ———> 77:13
342 ———> 77:14
343 ———> 77:35
344 ———> 77:38
345 ———> 78:17
346 ———> 78:18
347 ———> 78:38
348 ———> 78:39
349 ———> 78:40
350 ———> 79:6
351 ———> 79:35
352 ———> 79:46
353 ———> 80:34
354 ———> 82:15
355 ———> 82:17
356 ———> 82:18
357 ———> 82:19
358 ———> 83:5
359 ———> 83:6
360 ———> 83:11
361 ———> 83:34
362 ———> 85:2
363 ———> 86:9
364 ———> 90:14
365 ———> 101:4

দেখলেন তো দিন উল্লেখ করা হয়েছে ৩৬৫ বার মাস ১২ বার আর দিন সমুহ ৩০ বার। কোরআনে ৬০০০ এর অধিক আয়াতের মধ্যে সুর্নিদ্দিস্ট ভাবে প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে কিভাবে আল্লাহ সঠিক ভাবে সংখা সমুহ উল্লেখ করেছেন তা সত্যিই আশ্চর্যজনক ও বিস্ময়কর ব্যপার।

একবার ভেবে দেখুন ১৪০০ বছর আগে যখন কোরআন নাযিল হয় তখন তা ২৩ বছর ধরে একটু একটু করে ভিন্ন ভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে নাযিল হয় , এবং সেই যুগে এত একুরেট ভাবে শব্দ সমুহ স্থাপন করা মানুষের পক্ষে কম্পিউটার ছারা সম্ভব নয়। কিন্তু  অবশ্যই আল্লাহর কাছে তা কিছুই না  আল্লাহ কোরআনে প্রতিটা শব্দ বিজ্ঞতা ও চমকপ্রদতার সাথে ব্যবহার করেছেন।

0 comments